দীপঙ্কর বাগচীর কবিতা
paul gauguin |
ঈশ্বর ও গাধার সংলাপ
সকল কাজের কাজ, ফেলে আসে আমাদের গাধা
এ জীবন ঘূর্ণমান, এ জীবন বস্তুতঃই বাধা
কে তবে ফিরেছে দূরে, সন্ধ্যা সূর্যে এতো রঙ করা
বিষাক্ত বীজের ক্ষেত ছুঁয়ে আছে যেভাবে পাহারা
এই রাত্রি নমাজের, এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে
উপাসনা ছাড়া কিছু, আছে নাকি দিনের অদূরে
মানুষের মতো ঠোঁট, মানুষের মতো কেউ বসে
আমার সমস্তবেলা কেটে যায় কীসের আবেশে
ঋতুও যখন আসে ধস্ত হয়ে বিকারের প্রায়
দূরে দূরে জ্বলে তারা, বালিকারা কোথায় হারায়
দিনের ভিতরে দিন ডুবে গেলে গোলার্ধের পরে
কে তবে এসেছ এই রাত্রিদিন এমন আষাঢ়ে
এই রাত্রি নমাজের এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে
উপাসনা ছাড়া কিছু আছে নাকি দিনের অদূরে
বাতাস
কচুরিপানার দেশে, এসে গেছি অবশেষে
ভাঙা বাড়িটার আলো
বলেছিলে সব ভালো
কোন পথে তোমাকে হারাই
আমার তো কিছু নাই , অন্ধকার বনে তাই
একা একা ঘুরে গেছি
সব কিছু মিছি মিছি
বাতাসের দোলা লেগে ,এসেছে সবাই
যতো ভাবি এলোমেলো ,কুয়াশায় কারা এলো
ঝোড়ো হাওয়া বুকে নিয়ে
এপাড়া ওপাড়া দিয়ে
উড়ে যায় টিন ছাদ ,দেখো সাঁই সাঁই
তুমি বলেছিলে লেখো , খানিকটা আড়াল রেখো
বলো বাগ-দেবী আমি ,তোমাকেই চাই
আজ সন্ধ্যা কালে এসে
মিশে গেলো কারা শেষে
কচুরিপানার দেশে , হলো এক ঠাঁই .....
ভারবাহী
প্রথম মানুষ জন্ম ,আজ পৃথিবীর
এই জন্মে আদর্শের ,কথা গুলো
আসেনা কখনও ...
নিম্নরুচি চিরকাল মধ্য মেধা
করেছে চয়ন ....
এ জন্মে ঈশ্বর আছে , এ জন্মে নেই কোনও
ঈশ্বর সৃজন ।
কেন কাব্য চিরকাল জগতের প্রাচীন প্রণেতা
একমাত্র এখানেই নেই ,কোনও আদর্শের জয়
ছোট লোক , ক্ষুদ্র মেধা , মধ্যপন্থী আদর্শের দূত
প্রতিদিন খুন করে,মাথা ঠোকে দেওয়ালের গায়ে
আদর্শ প্রভূত ক্লান্তি , আমাদের ঢেলে দেয় রোজ
ঐখানে কবিতা নেই , শিল্প কলা ,অধরা সেখানে
এক-চোখে কোনোদিন , বিশ্বরূপ দেখা যায় নাকি !!!
প্রক্ষিপ্ত অংশেই আছে , মহাভারতের রহস্য প্রলয়
ট্রয়ের যুদ্ধের শেষে , কারা যেতে ,কারা হেরে যায়
মহাভারতের শেষে ,কোন পক্ষ জয়ী হয় বলো
আমি ক্ষুদ্র নিতান্তই, কিশোর কালের শেষে দেখি
কবিতা কি হতে পারে ,আদর্শের প্রথম বিগ্রহ???
আদর্শের কথা প্রভু ---- বোলো না আমায়
ওসব বানানো কথা
কবিতাকে ভারবাহী করে ...
জয়গান গায় যাঁরা, কবিতার আদর্শের নামে
কিংবা যাঁরা সামাজিক, সত্য দিয়ে শিল্পকলা দেখে
তাঁদের আমার কিছু, বলা নেই, শুধু একটি কথা
কবিতা রহস্য মন্ত্র
তাকে তুমি ভারবাহী ,পশু বানিওনা।
লাঞ্ছনা
আর কত নির্যাতন ,করবে আমায়
কবির জীবন দেখো,
বস্তুতই ভূতের বেগার ,
যত বেশি বিপন্নতা ,লাঞ্ছনার অন্ধ গলি ঘুঁজি
সব আজ পাশ ফিরে
তোমাকেই লক্ষ্য করে রোজ।
কেন শুধু এই ভার ;রূপদক্ষ
জেনেছে কখনো!!!
রাঙামাটি যেই দেশে, সেদেশের যুবতীরা
ভাস্কর্য প্রতিম
যুবকেরা ধীর শান্ত ,অদ্ভুত স্বভাব
আমি কেন জেনে শুনে , মনে মনে
চেয়েছি তাদের ---
লাঞ্ছনার অতিরিক্ত মেঘ
জমে আছে আমার দুয়ারে ––
শরতের এলোমেলো ,স্মৃতির শরীরে
জেগে ওঠে ,ছেঁড়া মেঘ ,অন্ধ এক আলো
পথে পথে ঘুরিয়ে সে --- প্রতিদিন অর্বাচীন
আমাকে যে কিসব শেখালো ।
ভূতের বেগার খাটা ,কবির জীবন
বিপন্ন কথার মাঝে
ধূলোমাখা মেয়েটির মন ।
ধ্বনি
কথার অশ্রুত ধ্বনি বেজে ওঠে
আমি আরও দ্রুত
অবকাশে মেতে উঠি রোজ
যে হারানো বাক্যগুলো বহুদূরে সরে যায় ধীরে
তুমি কি তেমনই ওগো
আমার অসুখ!!!
এ জগতে কোনও কথা ,কোনও বাক্য
ধ্বনির আকাশ
নতুন কি দিতে পারে
এই ভেবে আমি , হেঁটে চলে বেরিয়েছি
একা .....মানুষের বন থেকে
অরণ্যের কাঠ থেকে,ফল থেকে ,মূল থেকে
মনে মনে আরও কতো
প্রাচীন পাহাড়ে চলে গেছি প্রায়
তবু কেন এ জীবন , প্রশ্ন হয়ে ঘুরে ঘুরে
তোমাদের বাড়ির দরজায়
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুনঈশ্বর ও গাধার সংলাপ, ভারবাহী এবং ধ্বনি এই তিনটি কবিতা বিশেষ করে ভালো লাগল।
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগলো...😊😊😊
উত্তরমুছুনবাহ, বাহ, দারুণ! প্রতিটি লেখাই অনন্য মাত্রা বহন করছে
উত্তরমুছুনকবিতা পাঠের অনুমতি কি আছে?
উত্তরমুছুনআছে
উত্তরমুছুন