সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান


পৃথ্বী বসুর কবিতা 

















তোমাকে


তোমার সমস্ত দুঃখ ম্লান করে বেঁচে থাকতে চাই।
দু-হাতে ব্যথার বীজ ছড়াও এখন, এইখানে--
একদিন গাছ হবে। আমি তার ছায়ায়-ছায়ায়
পোষা কুকুরের মতো ঘুরে ঘুরে জীবন-সন্ধানে,
সময় ফুরিয়ে দেব… আমাকে পিছনে ফেলে যাঁরা
দূরের উৎসব থেকে জ্বলে উঠছে আজ অন্ধকারে
তাঁদের নিয়তি আমি দূরদর্শী জ্ঞানীর প্রজ্ঞায়
টের পাই, যেন তাঁরা কুয়াশার নির্বাক পাহাড়ে
নিজেদের লক্ষ্যবস্তু নিজেরাই ঠেলে দিচ্ছে খাদে…
তোমার জীবন তুমি এইভাবে কেন অবসাদে
ব্যর্থ করে দেবে বলে মনস্থির করে বসে আছ?
নুয়ে পড়া গাছও যদি উঠে পড়তে পারে দুর্বিপাকে,
তাহলে তুমিও এসে তৈরি করো আলোর বলয়---
নতুবা কোথায় যাব, কার কাছে, কে নেবে আমাকে?




সফল বৃষ্টির দিন ধরে রাখতে পারিনি বলেই,
দু-চোখের পাতা জলে ভরে উঠছে যখন-তখন...
আমার সামর্থ্য নিয়ে তুমি যেন বিদ্রূপ কোরো না!
তোমার তো জানা আছে, তার ছিঁড়ে গেলে, দৈত্যমন
কীভাবে তছনছ করে আমাদের ভেতরে, স্পর্ধায়--
রক্তের ভেতরে ঢালে প্রত্ননক্ষত্র থেকে বিষ;
এখন পৃথিবী তাই নিরন্তর সীমাবদ্ধতায়
জীবনে কুড়িয়ে পাওয়া অলৌকিক স্পর্শের হদিশ
বাতাসে ভাসায়; আর দূরের সম্পর্ক থেকে ওম
কাছে এলে ভ্রান্ত লাগে, তাহলে কি এবারও সংযম
সমস্ত শরীর থেকে, মন থেকে, মুছে ফেলবে টান?
মিথ্যের মোড়কে আমি কতবার ঈশ্বরের দান
ছুঁড়ে ফেলে দেব দূরে, আগেকার মূর্খ অভিমানে!
তোমার প্রশ্রয়ে আজ শুরু করতে চাই, সাবধানে...

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দীপঙ্কর বাগচীর কবিতা paul gauguin  ঈশ্বর ও গাধার সংলাপ   সকল কাজের কাজ, ফেলে আসে আমাদের গাধা এ জীবন ঘূর্ণমান, এ জীবন বস্তুতঃই বাধা কে তবে ফিরেছে দূরে, সন্ধ্যা সূর্যে এতো রঙ করা বিষাক্ত বীজের ক্ষেত ছুঁয়ে আছে যেভাবে পাহারা এই রাত্রি নমাজের, এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু, আছে নাকি দিনের অদূরে মানুষের মতো ঠোঁট, মানুষের মতো কেউ বসে আমার সমস্তবেলা কেটে যায় কীসের আবেশে ঋতুও যখন আসে ধস্ত হয়ে বিকারের প্রায় দূরে দূরে জ্বলে তারা, বালিকারা কোথায় হারায় দিনের ভিতরে দিন ডুবে গেলে গোলার্ধের পরে কে তবে এসেছ এই রাত্রিদিন এমন আষাঢ়ে এই রাত্রি নমাজের এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু আছে নাকি দিনের অদূরে বাতাস কচুরিপানার দেশে, এসে গেছি অবশেষে ভাঙা বাড়িটার আলো বলেছিলে সব ভালো কোন পথে তোমাকে হারাই  আমার তো কিছু নাই , অন্ধকার বনে তাই একা একা ঘুরে গেছি সব কিছু মিছি মিছি বাতাসের দোলা লেগে ,এসেছে সবাই যতো ভাবি এলোমেলো ,কুয়াশায় কারা এলো ঝোড়ো হাওয়া বুকে নিয়ে এপাড়া ওপাড়া দিয়ে উড়ে যায় টিন ছাদ ,দেখো সাঁই সাঁই তুমি বলেছ...
অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
অনুবাদ কবিতা কবীরের কবিতা অনুবাদ – চৈতালী চট্টোপাধ্যায়  চৈতালীর কবীর ১ মন তো অসাধু ব্যবসায়ী। তাতে লগ্ন হয়ে আছে এক কুটিলা পত্নী আর পাঁচ-পাঁচটি বেয়াড়া সন্তান! মন,ফিরবে না। বলছে কবীর, মনে ভারী শক্ত গিঁট পড়ে গেলে, সহজে খোলে না ২ কোরানে কিংবা বেদে, এ-শিক্ষা কোথাও নেই! লাগাম লাগিয়ে মুখে, পিঠে জিন পরাও, রেকাবে পা দাও। তারপর চলা-মন, তারপর পথ,নির্জন, সোজা স্বর্গে গেছে ৩ লোভ যেন ঢেউয়ের মতো। তোমাকে ডোবাতে কিছু জল লাগে না! রাজসিংহাসনে রাজা। রানী, রূপবতী। পূজারী পণ্ডিত, কিংবা ভেল্কি-দেখানো এক যোগী। নির্জলা সমুদ্রটিতে সব ডুবে গেলো! তবে,কে জীবিত? যার মন শিলায় গ্রস্ত, কবীর জানালো ৪ তীরে বসে থাকি। নৌকো আসবে। কোথায় যাচ্ছি? স্বর্গ আদৌ আছে নাকি! ওহে নয়নপথগামি! তোমাকে সর্বত্র দেখি আমি। কবীর মিনতি করে, এ-যাত্রা দাও রেহাই! আছি বেশ, এখানেই তো আমার ঠাঁই ( কবীর অনুবাদ করেছি বটে, কিন্তু সেই আধ্যাত্মিকতা বোঝার সাধ্য আমার নেই। সেই সময়ের ভক্তি ...