সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শ্রবণের রাজনীতি


বুধাদিত্য চট্টোপাধ্যায়















শ্রবণের রাজনীতি


বুধাদিত্য চট্টোপাধ্যায়


১. আমি তোমার সঙ্গে কথা বলছি তবু তুমি কেন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ?


উত্তর না দেয়া একটি রাজনৈতিক কৌশল যা ব্যবহার করা হয় প্রেরক বা কথকের কণ্ঠস্বরকে উপেক্ষা করার জন্যে। এমত কৌশল তখনই ব্যবহার করা হয়, যখন কথকের মতামত প্রাপকের থেকে আলাদা; রাজনৈতিক, সামাজিক অথবা মানসিকতার দিক থেকে। কোনো ইমেইল,চিঠি, মেসেজ বা কথিত বার্তা কে পড়ে বা শুনেও সাড়া না দেওয়াকে একটি ক্ষমতা প্রদর্শন ভাবা যায় – যখন এই প্রদর্শন  সচেতন ভাবে প্রেরক অথবা কথককে অগ্রাহ্য করে অথবা ছোট করে দেখায়। এটি এমন একটি হায়ারার্কি যেখানে প্রাপক নিজেকে উচ্চস্থানে বসিয়েছে। প্রাপক এমতো অবস্থায় বাধ্য হয় তার ভয়েস ও মতামতকে অগ্রাহ্য হতে দিতে। এভাবে তার প্রতিক্রিয়া পাওয়ার প্রত্যাশা আহত হয়। এমন নিরবতার বার্তাকে নানা ভাবে ডি-কোড করা যায়, চরমতম টি হল- 'তুমি আমার উপলব্ধিতে বিদ্যমান নও' । প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি নির্বিশেষে 'উত্তর না দেওয়া' এমন একটি কৌশল, যা যোগাযোগ মাধ্যমে একটি নেতিবাচক প্রত্যাশা স্থাপন করে, ও কথকের বা প্রেরকের যোগাযোগ করার ইচ্ছে পরিত্যাগ করতে বাধ্য করে। এটিই হলো প্রাপকের না শোনার মূল উদ্দেশ্য।


২. সম্ভবত, তুমি আমার কথা শুনছ না


যখন কোন কথার উত্তর পাওয়া যায় না, তখন একটা বিপদজনক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এতদসত্ত্বেও কেউ কেউ কথা বলার চেষ্টা করে যেতে থাকে। তাদের কণ্ঠস্বর স্বঘোষিত কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া না পেলেও কিছু মুক্ত ও সৎ শ্রাবক এর কাছে তাদের বার্তা পৌঁছে যায়। তাহলে ভাবা যেতেই পারে, যে এই সমস্ত স্বঘোষিত কর্তৃপক্ষেরা ইচ্ছে করেই না শোনার ভান করছে? অথবা তাদের শ্রবনাঙ্গ অকেজো হয়ে গেছে? হয়তো নয়। শুনতে না পারা প্রেরককে আরো বেশি শত্রুতা দেখানোর একটি ভঙ্গি মাত্র। এমত ভঙ্গিমা প্রেরক বা কথককে অযাচিত কোলাহল (noise) বলে ভাবতে থাকে– Noise যেখানে এমন এক অপরিশোধিত অপাংক্তেয় শব্দ, যার কোনো পরিচিতি থাকতে পারে না। প্রেরক বুঝতে পারে তার উপস্থিতি গ্রাহ্যই হচ্ছে না। এ যেন ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে অপঠিত মেসেজের মত- দেখেও না দেখা। এমন প্রত্যাখ্যানে যোগাযোগ ভেঙে পড়ে। কথা ও বার্তারা ঝরে পড়ে ধূলি-ধূসরতায়। 


৩. করিডোর জুড়ে অপেক্ষা করে যারা, তাদের চোখে ভয় এবং ঘৃণা; রাস্তা জুড়ে হেঁটে যায় যারা, তাদের চোখে অব্যক্ত ক্রোধ


যদি আমি সমসাময়িক সময়ের শব্দ শুনতাম, তাহলে শুনতে পেতাম এক ভয়াবহ নৈঃশব্দ। এই মহাদেশ ও এই ভৌগোলিক মানচিত্রে এক অস্থির আবহাওয়া এখন। ইউরোপের রাস্তায় প্রাতিষ্ঠানিক গম্বুজের ভিতরে, আমি দেখেছি সেই সমস্ত মুখ, যাদের চোখে ঘৃণা ও অবন্ধুতা। আমার উপস্থিতি ক্রমাগত আমার মর্যাদা ও নিরাপত্তা কে ক্ষুন্ন করছে। এই সমস্ত মুখে ভয় ও হতাশার ছবি সুস্পষ্ট। বৈষম্যকে এত গুরুত্ব ইউরোপ আর কখনো দেয়নি,শুধু দুই বিশ্বযুদ্ধের সময় ছাড়া। এই ইউরোপ কার? আমার মত অভিবাসীদের জন্য আর নয়। এখানে সবাই আর নিরাপদ নয়। এই ভারতবর্ষ কার? এখানেও সকলে কি নিরাপদ বোধ করছেন? রেললাইনে পড়ে থাকা মৃতদেহ গুলি কার?


৪.বহিরাগত হলো সে-ই, যে ভাবনার প্রান্তে থাকে, ও কেন্দ্রের দিকে আসতে চায় এবং এভাবে যে Noise হয়ে পড়ে।


এক গভীর ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি, এই মহাদেশ, যা ছোটবেলা থেকে মাথার ভেতর নিয়ে আমি ঘুরে বেড়িয়েছি, আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ছে। ধন্যবাদ তাদেরকে যাদের চোখে অসহিষ্ণুতা তাদের জন্য সুখ, সুসংবাদ আনবে এই মহাপতন ক্রমশ হতাশার বোধ নিদারুণ চেহারা নিতে থাকে। যে মানবজমিন 'অপর'/ (other)- কে সম্মান দিতে জানে না, সে নিজেকে কতটুকু সম্মান করতে শিখেছে? 


৫. আমাকে নীরব করতে চাইছে যারা তারা কি আমার অভ্যন্তরীণ ভাষ্য স্তব্ধ করতে পারবে?


অতি জাতীয়তাবাদী সরকারগুলির উত্থান ও ক্ষমতা দখল এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ইউরোপ ও এশিয়ার বহু প্রান্তে। প্রতিষ্ঠানগুলি ক্রমবর্ধমানভাবে রক্ষণশীল হয়ে পড়ছে। – তাদের একচেটিয়া মতাদর্শ ও ভূয়ো জনদরদী নীতি মানব ও জমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তৈরি করছে শূন্যে ভাসমান বাবল্ (Bubble)। অবিভিন্ন সুযোগ শুধু ফাইলবন্দী থাকে। আসলে ভাষা ও চামড়ার রঙ, বিবেচনার প্রধান উপলক্ষ হয়ে উঠেছে। যদি দেওয়ালে কান পেতে শুনি, শুনতে পাই এক গভীর বিদ্বেষ;  মানুষের প্রতি মানুষের, প্রকৃতির প্রতি মানুষের, প্রাণীজগতের প্রতি মানুষের। 


৬.  শ্রবণাঙ্গের ব্যবহার


নিশ্চিতভাবে সমসাময়িক মানবসমাজকে এখনও হাজার হাজার বছর পরেও শিখতে হবে, কিভাবে এই প্রগাঢ় দ্বন্দ্ব-মূল্যবোধ,জাত্যাভিমান, ও বিশ্বাসের দ্বন্দ্ব সমাধান করা যায়। এই সমাধানের পথে শ্রবণাঙ্গের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আমরা শুনতে পেলেও অনেক সময় শুনতে চাইনা, এমন অনেক ভাষ্য, কন্ঠস্বর, বার্তা, এমনকি প্রাকৃতিক শব্দও, যা আসলে আমাদের ভাবনার ও আত্মীকরণের সুযোগ দিতে পারতো। শুনতে না চাওয়া শুনতে না পাওয়ার থেকে আলাদা। শুনতে না চাওয়ার মূল কারণ অপরকে অবচেতনে আলাদা করে ফেলার একটা প্রচেষ্টা যা এমন একটি পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করে যেখানে 'Difference' (দেরিদার অন্যতম প্রধান হাইপোথিসিস) জরুরী একটি ধারণা। আমরা যদি আমাদের সমাজের প্রান্তজ কথকের ভাষ্য শুনতে না পারি, যদি শুনতে না পারি পরিবেশ সংক্রান্ত তথ্য ও প্রচার, যদি শুনতে না পারি আমার পাশের মানুষটির অনুভূতি ও দুঃখের হতাশা, তাহলে সামাজিক রাজনৈতিক ও পরিবেশগত বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। সমষ্টিগত প্রতিরোধের সুযোগ আর আসবে না, যদি আমরা আমাদের শ্রবণাঙ্গ এই বিপর্যয়ের সময় ব্যবহার করতে না পারি। দুঃখের আর অবধি থাকবে না তখন।


৭. দেওয়ালে কার ছায়া? সে কি আমার অধরোষ্ঠ? আমার বার্তা? আমার ভাষ্য? তুমি শুনতে না পেলেও দেওয়াল কথা বলে উঠবে


কোলাহল নির্যাতিতের গান। সমর্পিত কোলাহলকে অস্বীকার করা কঠিন। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কোলাহল শক্তিশালী, কারণ তা সর্বত্র বিরাজমান। কোলাহল যেকোনো বন্ধ দরজা দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে পারে। সেই বন্ধ দরজার ওপারে হয়তো কোনো কর্পোরেট অফিসের নিরাপত্তা রক্ষিত করিডোর– সেই কর্পোরেট, যা তার অধস্তন কর্মচারীদের ক্রমাগত বঞ্চিত করে চলেছে এবং যা জঙ্গল কেটে ও বহু প্রান্তজনকে উৎখাত করে বানিয়েছে ফ্যাক্টরি। কোলাহল কানের কাছে বাজতে (Buzz) থাকবে যতক্ষণ না করিডোরে সঞ্চারিত হয় ভয়, ও তা কেঁপে ওঠে। কোলাহলের বলিষ্ঠ সৌন্দর্যবোধ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানকে উদাসীন থাকতে দিতে পারে না। কোলাহলের নিজস্ব গতিশীলতা আছে, যা স্থিতাবস্থার দাসত্বকে আহত করে ফেলতে পারে। যাদের কণ্ঠস্বর কোলাহল হয়ে উঠতে পারে, তাদের ভাষ্য অপঠিত রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। যারা নীরবতাকে প্রশ্রয় দেয়, তাদের প্রতি কোলাহল একটি প্রগতিশীল পাল্টা কৌশল। শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেট এর শোষণমূলক Nexus এবং তার নিয়ন্ত্রণের বেড়াজাল বিচ্ছিন্ন করে ফেলার ক্ষমতা রাখে কোলাহল ।



৮. মার্জিনের অন্য দিক থেকে আমি ঠোঁট নাড়িয়ে যেতে থাকি ও আমার কথনের অনুরণন তোমাকে আর স্থির ও ছদ্মপ্রসন্ন থাকতে দেয় না


যদি কেউ বার্তা পাঠাতে তীব্রভাবে আগ্রহী হয়, যদি বার্তা পাঠানোর উপর তার জীবন ও মৃত্যু নির্ভর করে(যেমন বর্ত্মানে ক্লাইমেট চেঞ্জ বা রিফিউজি ক্রাইসিসের অবস্থা ) শুনতে না চাওয়ার চেষ্টা তাদের ক্লান্ত করতে পারে। তাদের সংগ্রামকে বজায় রাখার দুটি উপায় থাকতে পারে, 

ক. আত্মধ্বংসের রাস্তা 

খ. সংগঠিত ব্যাঘাত (Disruption)

প্রতিষ্ঠান যখন বধির,তখন এই হলো চরমতম রাস্তা। ব্যাঘাত ও ভাঙ্গন ভীষণ কার্যকর হতে পারে তখনি, যখন তা গণতন্ত্রের সূক্ষ্ম ভারসাম্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং অন্যান্য সমস্ত কণ্ঠস্বরকে আন্তরিকভাবে শোনার পক্ষপাতী। কোলাহল করে সংঘটিত ব্যাঘাত সৃষ্টির রাস্তা সফল হবে তখনই যখন, তা ভিন্নমত পোষণের সম্ভাবনাকে রসবোধ এবং সরল,নিরহংকার, অসংকোচ শ্রবণের দ্বারা জারিত ও আত্মকৃত করতে পারবে। সংগঠিত বিঘ্ন সার্থক তখনই, যখন তার অন্তর্গত অভিপ্রায় জ্বলন্ত ছাই থেকে ঝকঝকে হিরে খুঁজে পাওয়ার বিশ্বাস রাখবে।












লেখকঃ

বুধাদিত্য চট্টোপাধ্যায় 
গবেষক, লেখক ও তাত্ত্বিক। শব্দ এবং  চলমান দৃশ্য নিয়ে তাঁর গবেষণা আজ বুদ্ধিচর্চা ও শিল্পচর্চায় এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে।   

PhD in Artistic Research and Sound Studies, The Academy of Creative and Performing Arts (ACPA), Faculty of Humanities, Leiden University, The Netherlands, 2017.





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দীপঙ্কর বাগচীর কবিতা paul gauguin  ঈশ্বর ও গাধার সংলাপ   সকল কাজের কাজ, ফেলে আসে আমাদের গাধা এ জীবন ঘূর্ণমান, এ জীবন বস্তুতঃই বাধা কে তবে ফিরেছে দূরে, সন্ধ্যা সূর্যে এতো রঙ করা বিষাক্ত বীজের ক্ষেত ছুঁয়ে আছে যেভাবে পাহারা এই রাত্রি নমাজের, এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু, আছে নাকি দিনের অদূরে মানুষের মতো ঠোঁট, মানুষের মতো কেউ বসে আমার সমস্তবেলা কেটে যায় কীসের আবেশে ঋতুও যখন আসে ধস্ত হয়ে বিকারের প্রায় দূরে দূরে জ্বলে তারা, বালিকারা কোথায় হারায় দিনের ভিতরে দিন ডুবে গেলে গোলার্ধের পরে কে তবে এসেছ এই রাত্রিদিন এমন আষাঢ়ে এই রাত্রি নমাজের এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু আছে নাকি দিনের অদূরে বাতাস কচুরিপানার দেশে, এসে গেছি অবশেষে ভাঙা বাড়িটার আলো বলেছিলে সব ভালো কোন পথে তোমাকে হারাই  আমার তো কিছু নাই , অন্ধকার বনে তাই একা একা ঘুরে গেছি সব কিছু মিছি মিছি বাতাসের দোলা লেগে ,এসেছে সবাই যতো ভাবি এলোমেলো ,কুয়াশায় কারা এলো ঝোড়ো হাওয়া বুকে নিয়ে এপাড়া ওপাড়া দিয়ে উড়ে যায় টিন ছাদ ,দেখো সাঁই সাঁই তুমি বলেছ...
অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
অনুবাদ কবিতা কবীরের কবিতা অনুবাদ – চৈতালী চট্টোপাধ্যায়  চৈতালীর কবীর ১ মন তো অসাধু ব্যবসায়ী। তাতে লগ্ন হয়ে আছে এক কুটিলা পত্নী আর পাঁচ-পাঁচটি বেয়াড়া সন্তান! মন,ফিরবে না। বলছে কবীর, মনে ভারী শক্ত গিঁট পড়ে গেলে, সহজে খোলে না ২ কোরানে কিংবা বেদে, এ-শিক্ষা কোথাও নেই! লাগাম লাগিয়ে মুখে, পিঠে জিন পরাও, রেকাবে পা দাও। তারপর চলা-মন, তারপর পথ,নির্জন, সোজা স্বর্গে গেছে ৩ লোভ যেন ঢেউয়ের মতো। তোমাকে ডোবাতে কিছু জল লাগে না! রাজসিংহাসনে রাজা। রানী, রূপবতী। পূজারী পণ্ডিত, কিংবা ভেল্কি-দেখানো এক যোগী। নির্জলা সমুদ্রটিতে সব ডুবে গেলো! তবে,কে জীবিত? যার মন শিলায় গ্রস্ত, কবীর জানালো ৪ তীরে বসে থাকি। নৌকো আসবে। কোথায় যাচ্ছি? স্বর্গ আদৌ আছে নাকি! ওহে নয়নপথগামি! তোমাকে সর্বত্র দেখি আমি। কবীর মিনতি করে, এ-যাত্রা দাও রেহাই! আছি বেশ, এখানেই তো আমার ঠাঁই ( কবীর অনুবাদ করেছি বটে, কিন্তু সেই আধ্যাত্মিকতা বোঝার সাধ্য আমার নেই। সেই সময়ের ভক্তি ...