সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হীরক রায়চৌধুরীর কবিতা

 
ছবিঃ কবি গাব্রিয়েলে তিন্তি (ইতালী)






কম্বিনেশন

গভীর অরণ্য থেকে খুঁজে পাই
তার মুখ,অনুশাসনের 
খোলসটুকু তুলে ফেললে দেখা যায়
চামড়ায় তার দাগ কেটে ব'সে গেছে, কব্জিতে ঘড়ির ব্যান্ডের
 ছাপ যেমন ব'সে যায় ,আন্তরিকতার তেল জল পড়েনি 
সেখানে বহুদিন;বহির্বিশ্ব
কিন্তু বহুদিন পর রোদে বেড়াতে
বেরিয়ে ঝলমলে,হাসিখুশি ! দেখা
যাক,আমি,সে আর অরণ্যের বাইরে
যা কিছু আছে স্বাস্থ্যকর সব মিলিয়ে
একটা ভরপুর কম্বিনেশন তৈরী হয় কিনা!  
         




কেঁদেই চলে গীটার



Commemorating The Beatles(Specially to the Song "While my guitar gently weeps".)

কীসের পরে কী সাজাচ্ছি!
নদীর পরে দেশ!
গীটার শুনে বুনছি মনে 
অ্যালকোহলের রেশ।

হ্যারিসন আর পল কে দেখো
নাচছে কেমন ভাই,
গীটারটাকে এইবারই তো
কাঁদিয়ে নেওয়া চাই!

মেঝের ওপর ময়লা জমা
মুছতে হবে ক'ষে,
এরিকটা তাই ঘষছে গীটার 
ভদ্রলোকের রোষে।

ভালোবাসার কথা যখন
উঠছে তারের মাথায়,
 জর্জ তখনই
পাচ্ছে ব্যথা 
কেনা বেচার খাতায়।

বিকৃতি আর পরিবর্তন
এইসবও তো ছিল!
সাবধানতার পথ না দেখে
পিছল পথে গেল।

ভুলগুলোকে শুধরে নিতে
সময় এসেছিল
ভদ্রলোকের মতন গীটার
শুধুই কেঁদেছিল।

মঞ্চের ওপর হচ্ছিল এক
নাটক অভিনীত
নাচছিল আর গাইছিল সব
তোমার আমার মতো।

বছর বছর দেখে শুনে
বাড়ছে কেবল বয়স
বৃদ্ধ এবং শান্ত হলেও
কাঁদছে গীটার তা বেশ!




পাথর
আর কত!  চোয়াল পড়েছে ঝুলে
নেমে গেছে ঝুরি বেয়ে সারে সারে
বয়সের প্রবালপাথর।
প্রেম এসে ফিরে গেছে,চোখ ভ'রে
মেপে গেছে,চোখ মেলে বুঝে গেছি
আমি কত ঈর্ষাকাতর!


  নপুংসক

আমি তবু ঘুরে চলি বন থেকে বনে
নপুংসকও লিখে চলে নিকৃষ্ট পরিভাষায়
এক ধোঁয়ার আঁচলে।

এত যে নগর ঘুরে ঘন হল কালান্তক
দোষ সুনামের কোমর জড়িয়ে,
মেহগনি,নিমফল সব ই তো স্বাস্থ্যবর্ধক
 তা জানি তবু সাহায্য নিয়েও
নিজ সৃষ্টি প্রদর্শনে  অক্ষম
 পারিপার্শ্বিক লোকাচার  কৌশলে পুড়িয়ে।

হৃদয়ের অসহ্য ভার
রোগাক্রান্ত ঘোড়ায় টানা 
শকটে ছুটে চলে,
প্রাচীন সারথি তাকে টেনে
নিয়ে যায়।
কলির পরের যুগ  ব'সে আছে
আমরাও ব'সে আছি
নবধারাজল অথবা দুর্ভিক্ষে
শান্ত হওয়ার ক্লিষ্ট অপেক্ষায়।








মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
দীপঙ্কর বাগচীর কবিতা paul gauguin  ঈশ্বর ও গাধার সংলাপ   সকল কাজের কাজ, ফেলে আসে আমাদের গাধা এ জীবন ঘূর্ণমান, এ জীবন বস্তুতঃই বাধা কে তবে ফিরেছে দূরে, সন্ধ্যা সূর্যে এতো রঙ করা বিষাক্ত বীজের ক্ষেত ছুঁয়ে আছে যেভাবে পাহারা এই রাত্রি নমাজের, এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু, আছে নাকি দিনের অদূরে মানুষের মতো ঠোঁট, মানুষের মতো কেউ বসে আমার সমস্তবেলা কেটে যায় কীসের আবেশে ঋতুও যখন আসে ধস্ত হয়ে বিকারের প্রায় দূরে দূরে জ্বলে তারা, বালিকারা কোথায় হারায় দিনের ভিতরে দিন ডুবে গেলে গোলার্ধের পরে কে তবে এসেছ এই রাত্রিদিন এমন আষাঢ়ে এই রাত্রি নমাজের এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু আছে নাকি দিনের অদূরে বাতাস কচুরিপানার দেশে, এসে গেছি অবশেষে ভাঙা বাড়িটার আলো বলেছিলে সব ভালো কোন পথে তোমাকে হারাই  আমার তো কিছু নাই , অন্ধকার বনে তাই একা একা ঘুরে গেছি সব কিছু মিছি মিছি বাতাসের দোলা লেগে ,এসেছে সবাই যতো ভাবি এলোমেলো ,কুয়াশায় কারা এলো ঝোড়ো হাওয়া বুকে নিয়ে এপাড়া ওপাড়া দিয়ে উড়ে যায় টিন ছাদ ,দেখো সাঁই সাঁই তুমি বলেছ...
পূর্বা মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা    ইতিবৃত্ত, ইতিবৃত্ত নয়...                  আঁচ ------- মরা অক্ষরের গায়ে যতটুকু প্রাণ, ততটুকু প্রেম। আমি আর ততোধিক নই। বাতাস ফুরিয়ে গেলে সর্বস্ব সমেত উবে যাব। ফেলে যাব দুটিমাত্র বই - 'ইতিবৃত্ত'।' ইতিবৃত্ত নয়'। ওরা কোনও পাঠক পাবে না। কড়াই --------- নেভা আগুনের আঁচ গসগসে হয়। উনুনের দূরছাই জ্বর। বাবা কি ওষুধ দেবে?রাত্তিরে উনোন ঘুমোবে? নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবে কয়েকটা বছর? উনুন না জ্বেলে আমি কোনওদিন লিখতে  পারিনি। পালতেই পারিনি এই সামান্য জীবন ! 'এইসব সাময়িক উত্তেজনা ' উনি বলতেন। উনি, মানে শিয়রে শমন, আমি যাতে লেখাপত্র সুসিদ্ধ করতাম। অলীক ----------- রাত্রি একটার পর ঘড়ির কাঁটারা তীব্র হয় শ্বাসাঘাত গুণে গুণে লিখি জল দাও জল দাও জল দাও আমার শেকড়ে... জানলায় পর্দা ওড়ে, দেয়ালে তেষ্টার ছায়া পড়ে ঝুরিনামা শায়িত গাছের। দুহিতা --------- ধূপছায়া মেয়ে আহা ধূপছায়া মায়ের সন্তান পিছু পিছু দু পা হাঁটে, দু আঙুলে আঁচল জড়ায়। 'ও কি রে মা !  ভয় পাস ? আয় দেখি, কাছে ...