সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান


প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা 





ছবিঃ অর্পণ বসু 


অনিবার্য যৌন শালপাতা  
(প্রজিত-কে ) 



ভাঁড়ুদাস, পথে চলো 
শ’য়ে শ’য়ে ফুটে আছে পাছার বিপণী 

তুমি আর কারও কথা শুনোনাকো
জাঙিয়ার কথা শোন 
কেন সে অযথা ভিড়ে 
একা কষ্ট পায় 

আস্ফালন নাই তার 
নাই তার স্ফুরিত সময় 

তুমিও তো দল পিছু 
পিছু পিছু 
হেঁটেছো সরণী 
ন্যুব্জ পিঠের ঘাম ভিজিয়েছে কক্‌সিক্স 

তুমিও তো বাঁকা চোখে দেখেছো ভার্জিন 
কিভাবে ফুঁকছে সিগারেট 
তোমাকে দেয়নি ভাগ 
তাই কি তোমার রাগ 
পোশাকের মেধা থেকে ঝরেছে বাজার 

রোদ ছিলো --সরে গেছে 
আভা ছিলো -- মরে গেছে 
সানস্ক্রিন ছাতামাথা 
ছাঁট সম্বল 


ভাঁড়ুদাস, পথে এসো 
মাইরি তোমার থেকে বড়ো কোন 
চারপেয়ে নেই 


কি কথা আলোর সাথে ? আলেয়ার ? 
সময়ের থেকে বিষ  
গড়িয়ার ঠেকে হিসি 
ছড়িয়েছে 

ব্লার্ব ও কভার ড্রিবলিং 

দেখো যেন গোল করোনাকও, 
থ্রু-পাস এমন দাও 
যে ধরবে সে অফ্‌-সাইড খাবে  

গরল অমৃত হলে 
আমেরিকা গোর দেবে অস্ত্রভাঁড়ার 

কোজাগরে অজগর চাঁদ গিলে নেবে 





দিব্য যখন মারা যায় 
বাথরুমে জল পড়ছিলো। 

মিহির মরার সময়
সদ্য কাচা রুমালে বেঁধে রেখেছিল 
খুচরো পয়সা। 

অয়ন্তিকা মরার আগে 
অন্তত কুড়িজনকে মিস্‌কল দিয়েছিলো। 

চারপাশ থেকে এরকমই একটা মরা হাওয়া 
নাকে এসে লাগছে তোমার ---


আরে রাম রাম ভাঁড়ুদাস 
তাই বলে হ্যাঁচ্চো হ্যাঁচ্চো করে 
হেঁচে মরার কথা ছিলো নাকি ! 

নিদেনপক্ষে গর্দভ রাগিণীতে 
জীবনকে দু-চার পিস্‌ শের ও শায়রি গেয়ে 
ভেউ ভেউ করে কেঁদে মরলেও তো পারতে ! 

পাবলিক কাঁদবে 
এ’রকম কোনও ইল্যুশনে আছো নাকি, ভাঁড়ুদাস ? 






মেয়েটা তোমার জন্যে পাগল। 

অথচ বিছানা বালিশে 
তুমি সেই পাগলামো মাখামাখি করতেও হয়রান 

এ তো টাক্‌ ঢাকতে চুলের বদলে 
চুল ঢাকতে টাকের অবস্থা, ভাঁড়ুদাস ! 

তেল লাগানোর ব্যাপারটা 
এদ্দিনে বাংলাবাজার থেকে শিখলেও তো পারতে, বাপু !

ট্র্যাফিকে পরিবর্তন বাজছে 
‘কিছুই তো / হ’লো না...’ 





বয়েস হচ্ছে, ভাঁড়ুদাস 
তিলক শৃঙ্গার হবে নাকি ? 

পালাকেত্তন দলে 
ঊর্ধবাহু বগলের ঘাম শুঁকে শুঁকে 
দাস অনুদাস হয়ে ল্যাজ নাড়ি, চলো। 

কেতাবে অনেক কথা লেখা থাকে। 
সব কথা মেনে-জেনে 
কখনো সময় পা পিছিয়েছে? 

দুই যুদ্ধ শেষ করে 
তিনি যুদ্ধে ডাকছে প্রলয় --- 
সেই আঁচে ফুঁ না দিয়ে 
ব্যোম শঙ্করী দম টেনে চলো মেলা অবেলায়। 

চারপাশ এতো বদলেছে 
তুমি তার তালে তাল রাখতে পারও নি। 
তোমার ফালতু অভিশাপ 
তোমার বাতিল কথাবলা 
শেষ ট্রাম চলে গেলে চাকার ফুলকি নিভে যায়। 

কে যেন চেঁচিয়ে ওঠে-- হেল্লাশ 
ভাঁড়ুদাস, কে যেন চেঁচিয়ে ওঠে 
ফাঁক 

গ্লাস ভাঙে মদের ছ্যাঁকায়... 






৫ 
বারোটা-তেরোটা বেজে গেছে 
কি আর ফেরাবে, ভাঁড়ুদাস 
কতোটুকু ফেরে ? 

জোরাজুরি সোনাঝুরি ফোটাবে না ফুল 
শিলা ভাসিবে না জলে। 

নিছক একটা দেহ 
তাই নিয়ে জীবনের কতো ক্যারদানি 
ভাবনার মুখগুলো 
না ভেবেও দেখা গেলো এক ! 

ভালো না থাকার অভিশাপ 
দু’হাত পকেটে পুরে হেঁটমুন্ডু রাস্তায় ঘোরে
কপালের দেখাদেখি 
পকেটও ফুটো নিয়ে লাফ দিয়ে পগারের পার ! 

ছায়ায়, বিষম রোদে ঢোঁক গেলে বাসনা তোমার। 

এর বেশি কি-বা হবে  
শ্মশানের চিতাকাঠ 
গোরস্তানের মাটি 
অন্তিম দান দেবে জুয়ার টেবিলে 

রঙের টেক্কা ভেবে, ভাঁড়ুদাস 
তুমি আমি তদ্দিন 
চিঁড়ের গোলাম নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখি 

ঢেকুর উঠবে বলে খেয়ে যাই ভাত আর তাড়ি। 




ব্যাধিগুলোকে
চাঁদের সোহাগ ভেবে ভেবেই
বেলা গেল। 

রথ বেচা  কলা দেখা 
‘কিছুই তো 
হলো না’ 

এখন আর
 নদী নৌকো নদী  নৌকো নদী 
জপিয়ে জপিয়ে মাঝি 
কতদূর যাবে 

স্বমেহনে রাতদিন
চর্বি পুড়িয়ে বেঁচে আছো 
দিনাতিপাতের থেকে বড়ো কোন 
গ্লানিযুক্ত ভবিষ্যত নেই 
এটা জেনে গিয়ে 

বিষয়ভিত্তিক জল 
তাকে ঢেউয়ের আঙ্গিকে রেখে 
শব্দের ওড়াউড়ি খেলা 
অনেক হয়েছে 

তীর আর চাঁদমারি 
চিরটাকালীন ইতিহাস 

কতদূর কিবা দূর  
স্পেকুলেট 
তোমার করার কথা নাকি 

যখন জেনেছো  
ঈর্ষাও প্রিয় তাসখেলা 
জোকারও আড়চোখে বিবির পিছন মেপে যায় 

শূন্যতার ছায়া কিন্তু 
ক্লান্তির দু’হাত ছাড়ে না 

 আকাশ নিয়ে নেমে আসছে সমুদ্র 
আর বালি সরে যাচ্ছে... 






যারা ধুয়ে নিচ্ছে দুয়ে নিচ্ছে 
                    শুইয়ে শুইয়ে নিচ্ছে 

সেখানেই হাত আর জল এসে দাঁড়ালো। বিকলন এর মধ্যেই
নিজস্ব নাব্যতা করে নিয়েছে। ফলতঃ, বালিশ ভ্রু-কুঁচকে তাকালে 
কার্যকারণ বোঝা যায়। এমন নয় যে ব্যাপারটা ‘রেজিস্টার্ড’ই হয় নি! 
সে সব হয়েই থাকে আর সেখানেই কাদামাটির ওপর ছাপ ক্রমশ
বড়ো হয় গভীর হয়। তারপর সবাই তাঁবুর কথা বলে। নেকড়ের দাঁত 
কবে ঝিল্‌কিয়েছিলো সেইসব গালগপ্পো করে। 

পাথরের কিছু এসে যাচ্ছে না কারণ সে ভেতর থেকেই ভেঙে যাচ্ছে। 

জলের কিন্তু আসবে - যাবে। 

কোথায় রাখবে হাত
ভেবে নিয়ে রাখা
এটুকুই। 

বাকি সব সমুদ্রপ্রলাপে... 







বাজারটা তো সবে 
বাঁ চোখে একটু কান্নিক মেরেছে 
আর তাতেই তুমি, অফসাইড - অফসাইড বলে 
নাকেকান্না জুড়েছো, ভাঁড়ুদাস !  

মাঝ আকাশে এখন তো শুধুই ঢিল্লি প্যাঁচ 
রথ দেখা আর কলা বেচার সময়ে 
সবারই ভাগে কিছু না কিছু পড়বে, তা বলে কি 
তবিল ল্যাঙটে গুঁজবে, ভাঁড়ুদাস ? 

তহবিল তছরুপ বিচিত্র গলিঘুঁজি শুঁকে আর 
শুঁকে বমি করে 
মায়া ধরা ছায়া ছোঁয়া 
                   শিহরিত ত্বকের বাতাস 

ভাঁড়ুদাস, মনে পড়ে, বলা ছিলো 
বলাবলি ছিলো 
পৃথিবীতে ত্রাণ ভিক্ষা দুর্লভ আর তাই 
ট্রেন ভিক্ষা এতোটা সুলভ 

শৌচাগারও চিনে নাও নীলসাদা এমন মহিমা !  

তাহার তাহার পরে 
আর কীবা হইবার পারে 
আদতে আঁটির শুঁটি ঢ্যাঁক কলা গাঁড়ে... 







এখনও কি সংকেত পাও ?

বহুদূরে বৃষ্টি হয়েছিলো 
হাওয়া তার স্মৃতি নিয়ে আসে 

সেরকম দূরে আর যেতে পারলে কই ! 

অতএব সন্তোষ। কাছেপিঠে ঘুরে এসো, 
ভাঁড়ুদাস, পোঁটোলা কমিয়ে। 

চার হাতপায়ে ছায়া দন্ত ক্যালাক... 




১০

হাতির পঞ্চম পায়ে নজরানা দিতে দিতে, যাও  

ফাটল যেভাবে ছিলো, দুধেভাতে
সংসার বেড়েছে, সংসারের বহর বেড়েছে 

টপকে টপকে চলা আর 
মুখ থুবড়ে জিরনো, একই 
ছিলিমে তামাক খায় 
খাঁচাওয়ালা পার্কে 

প্রতিটা বিপজ্জনক মোড়েই তুমি দ্যাখো 
তোমাকে সমর্থন করছে 
বিরুদ্ধ বাতাস 

তুমি নিজেকে শক্তিশালী ভাবতে থাকো আর 
কলার খোসার দিকে এগিয়ে যায় 
তোমার বেপথু পা 

মানুষ যে রোজ কতোভাবে নিজেকে হাস্যকর হত্যা করে 





১১

তুমি পালাচ্ছো 
আর 
জন্মের অসম্ভব ভয় পিঠে নিয়ে 
মৃত্যুও তোমার দিকে, পালিয়ে আসছে 

রুমাল গিয়েছে, চোর 
কোথায় লুকোবে 

তোমাকে নিচের দিকে তীব্র কিছু টানছে 
ভাঁড়ুদাস, তুমি ভাবছো 
তোমার তার কেটে গেছে 
সংযোগ বিচ্ছিন্ন 
তাই, মাধ্যাকর্ষণ নীতি প্রবলতর, এখন  

অন্ধকারে নিজেদের ভুলিয়ে রাখা 
মানুষের আদিম চেষ্টাগুলোর একটা 

এবং চলছে সার্কাস নিয়েও তো তোমার 
খিস্তিখেউড় কম নেই 
এমনকি, থুতু’র 
যুগন্ধর ব্যবহার সম্বলিত কবিতাও 
ফাঁদা হয়ে গেছে 

বাতাসের সবকটা চোরাটান 
কাটিয়ে কাটিয়ে 
ড্রিবিল মাস্টার হতে চাও, ভাঁড়ুদাস ? 

যখন, বিস্মৃতির কুয়াশা গিলে নিচ্ছে সব 
যখন মাঠ নেই, কঙ্কাল স্টেডিয়াম 
উধাও হাতের থেকে, হাততালি 

পড়ে আছে 
অনিবার্য এঁটো শালপাতা... 






১২

ভাঁড়ুদাস কোপ খাবে? 
                কাপ খাবে ভ্যানিলার? 

রকমফের মৃতদেহ নিয়ে এই শতাব্দীর কাজকারবার। নীল নিপাট শুয়ে থাকার 
থেকে শুরু করে, যতভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হওয়া যায়। এরমধ্যে বেশিরভাগগুলোই 
তুমি দেখেছো। মানে, মাধ্যমবাহিত দেখাশোনা। অর্থাৎ, কোথাও একটা হত্যামঞ্চ 
প্রস্তুত হয়েছে। চলো সেখানে আমরা আমাদের চোখ নিয়ে যাই, কান নিয়ে যাই, বমি 
নিয়ে যাই। বিশ্বযুদ্ধ থেকে বিশ্বের যুদ্ধে ছড়িয়ে যাওয়া, প্রান্তরেও ‘গান’ আমার - 
মেঠো পথে ‘গান’ আমার।  তবে কি মানুষকে হত্যা করবে বলেই আরেকটা মানুষ 
রোজ দাঁত মাজে, স্নান সারে, পূজাপাঠ-সংগম করে !  

সবকিছুই কিরকম একটা বিশ্বাস থেকে উঠে আসছে, ভাঁড়ুদাস ! বিশ্বাস করেই গলা 
বাড়িয়ে কোপ, ঘাড় সোজা রেখে কোপ। আবার, যে কোপাচ্ছে, তার বিশ্বাস এ মানুষটার 
ঘাড়গলা বিপজ্জনক, অবস্থান সন্দেহজনক অতএব, শত্রুনিধনই শ্রেয় শাস্ত্রবচন। 
আর এই সবের মধ্যেই, ভাঁড়ুদাস, অবিকল নিজেকে কি দেখোনা, অনিবার্য যৌনবাধ্যতায় 
কাছাখোলা ! পরিত্যক্ত ভ্রুণ পড়ে আছে। আধার আধেয় মরজীবি। 
ওইসব মোম মিছিলগুলোয় যারা হাঁটছে, তাদের অনেককেই তো তুমি নানান ধান্দায়
 চিনে নিয়েছো, ভাঁড়ুদাস ! যারা নিস্পৃহ  থাকছে, তাদেরকেও। এর মধ্যে তুমি কোথায়? 
কি তোমার বিশ্বাস? কিসের অপেক্ষা করছো তুমি? 
আগুন আর রক্তের উৎসব কিন্তু শুরু হলও বলে। 

উদ্বেগ একটা প্ল্যাটফর্ম টিকিট, ভাঁড়ুদাস ! 

গলা দেবে ?  

মন্তব্যসমূহ

  1. এইসব লেখা শুধু পড়ার না।সংগ্রহে রাখার

    উত্তরমুছুন
  2. বেশ ভালো লাগলো এই গুচ্ছকবিতা। মাঝে মধ্যে চমক দেয়া লাইন, স্মার্ট উচ্চারণ। যেমন – “ তুমি পালাচ্ছো / আর / জন্মের অসম্ভব ভয় পিঠে নিয়ে / মৃত্যুও তোমার দিকে, পালিয়ে আসছে ” কিংবা “ভাঁড়ুদাস কোপ খাবে? / কাপ খাবে ভ্যানিলার?”। সমস্ত কবিতাটাতেই ছড়িয়ে আছে অসংখ্য দৃশ্যমুখ, চিত্রমালা। লেখাতে উঠে এসেছে বর্তমান দেশ কাল। লেখায় কবির স্বকীয়তা প্রচ্ছন্ন, সব মিলিয়েই একটা মুগ্ধময় কবিতা।

    উত্তরমুছুন
  3. পড়লুম! চমৎকার ইজ অ্যান আন্ডারস্টেটমেন্ট! থ্যাঙ্কিউ, পড়ানোর জন্যে।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দীপঙ্কর বাগচীর কবিতা paul gauguin  ঈশ্বর ও গাধার সংলাপ   সকল কাজের কাজ, ফেলে আসে আমাদের গাধা এ জীবন ঘূর্ণমান, এ জীবন বস্তুতঃই বাধা কে তবে ফিরেছে দূরে, সন্ধ্যা সূর্যে এতো রঙ করা বিষাক্ত বীজের ক্ষেত ছুঁয়ে আছে যেভাবে পাহারা এই রাত্রি নমাজের, এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু, আছে নাকি দিনের অদূরে মানুষের মতো ঠোঁট, মানুষের মতো কেউ বসে আমার সমস্তবেলা কেটে যায় কীসের আবেশে ঋতুও যখন আসে ধস্ত হয়ে বিকারের প্রায় দূরে দূরে জ্বলে তারা, বালিকারা কোথায় হারায় দিনের ভিতরে দিন ডুবে গেলে গোলার্ধের পরে কে তবে এসেছ এই রাত্রিদিন এমন আষাঢ়ে এই রাত্রি নমাজের এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু আছে নাকি দিনের অদূরে বাতাস কচুরিপানার দেশে, এসে গেছি অবশেষে ভাঙা বাড়িটার আলো বলেছিলে সব ভালো কোন পথে তোমাকে হারাই  আমার তো কিছু নাই , অন্ধকার বনে তাই একা একা ঘুরে গেছি সব কিছু মিছি মিছি বাতাসের দোলা লেগে ,এসেছে সবাই যতো ভাবি এলোমেলো ,কুয়াশায় কারা এলো ঝোড়ো হাওয়া বুকে নিয়ে এপাড়া ওপাড়া দিয়ে উড়ে যায় টিন ছাদ ,দেখো সাঁই সাঁই তুমি বলেছ...
অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
অনুবাদ কবিতা কবীরের কবিতা অনুবাদ – চৈতালী চট্টোপাধ্যায়  চৈতালীর কবীর ১ মন তো অসাধু ব্যবসায়ী। তাতে লগ্ন হয়ে আছে এক কুটিলা পত্নী আর পাঁচ-পাঁচটি বেয়াড়া সন্তান! মন,ফিরবে না। বলছে কবীর, মনে ভারী শক্ত গিঁট পড়ে গেলে, সহজে খোলে না ২ কোরানে কিংবা বেদে, এ-শিক্ষা কোথাও নেই! লাগাম লাগিয়ে মুখে, পিঠে জিন পরাও, রেকাবে পা দাও। তারপর চলা-মন, তারপর পথ,নির্জন, সোজা স্বর্গে গেছে ৩ লোভ যেন ঢেউয়ের মতো। তোমাকে ডোবাতে কিছু জল লাগে না! রাজসিংহাসনে রাজা। রানী, রূপবতী। পূজারী পণ্ডিত, কিংবা ভেল্কি-দেখানো এক যোগী। নির্জলা সমুদ্রটিতে সব ডুবে গেলো! তবে,কে জীবিত? যার মন শিলায় গ্রস্ত, কবীর জানালো ৪ তীরে বসে থাকি। নৌকো আসবে। কোথায় যাচ্ছি? স্বর্গ আদৌ আছে নাকি! ওহে নয়নপথগামি! তোমাকে সর্বত্র দেখি আমি। কবীর মিনতি করে, এ-যাত্রা দাও রেহাই! আছি বেশ, এখানেই তো আমার ঠাঁই ( কবীর অনুবাদ করেছি বটে, কিন্তু সেই আধ্যাত্মিকতা বোঝার সাধ্য আমার নেই। সেই সময়ের ভক্তি ...