শমীক সেনগুপ্ত'র কবিতা
অপ্রস্তুত খেলাঘর
১
তেঁতুল পাতায় অগণিত
কালচক্র জন্ম মৃত্যু খেলা।
জলের অভাবে রোদে পুড়ে
জরাময় দেহ নিয়ে জেগে
অনন্ত বাগান---
পশ্চিম আকাশে
শনের চুলের কারুকাজ
জরা ব্যাধি লোলচর্ম নিয়ে
অনন্ত বাগানে একা বসে!
বয়স চলেছে ক্রমে বেড়ে
নিয়তি শোকের আলো ক্ষিদে
গ্ৰাস করে জন্ম-জন্মান্তর
বহুবার শোক ভুলে গিয়ে
তেঁতুল পাতায় জাগে আলো
কালের নাচন.....
শনের চুলেরা চাঁদে ক্ষত
ভারতবর্ষের দুটো বুকে
তেঁতুল পাতায় পোড়ে শোক
কালচক্র জন্ম মৃত্যু খেলা!
চন্দনে মধুতে ঘৃতে পুষ্পে
দেহ পোড়ে ডোমের সম্মুখে
বৃহৎ তালুতে তার ধরা-
গতজন্ম ক্রোধ শোক আলো।
তেঁতুল পাতায় অগণিত
কালচক্র জন্ম মৃত্যু খেলা।
জলের অভাবে রোদে পুড়ে
জরাময় দেহ নিয়ে জেগে
অনন্ত বাগান---
পশ্চিম আকাশে
শনের চুলের কারুকাজ
জরা ব্যাধি লোলচর্ম নিয়ে
অনন্ত বাগানে একা বসে!
বয়স চলেছে ক্রমে বেড়ে
নিয়তি শোকের আলো ক্ষিদে
গ্ৰাস করে জন্ম-জন্মান্তর
বহুবার শোক ভুলে গিয়ে
তেঁতুল পাতায় জাগে আলো
কালের নাচন.....
শনের চুলেরা চাঁদে ক্ষত
ভারতবর্ষের দুটো বুকে
তেঁতুল পাতায় পোড়ে শোক
কালচক্র জন্ম মৃত্যু খেলা!
চন্দনে মধুতে ঘৃতে পুষ্পে
দেহ পোড়ে ডোমের সম্মুখে
বৃহৎ তালুতে তার ধরা-
গতজন্ম ক্রোধ শোক আলো।
২
মরণের পরে মৃত্যু হয়
তবে মরণের আগে দেখা
পৃথিবীতে কারা বেঁচে থাকে!
তাদের নশ্বর দেহভার
কাদা মাটি জলে গড়াগড়ি
ডোমের হাতের তালু বৃহত কঠিন
শতজন্ম অতিক্রান্ত শোক ক্রোধ আলো
অন্ধকার অভিমান কামনা বাসনা
সহস্র ঝর্নার জল ধুয়ে দেয় দেহ
মুখাগ্নি প্রসন্ন জেনে মৃগশিরা নক্ষত্রের দেহ
জলের নিকটে ভেসে আসে
জল ও আগুনে জ্বলে চোখ
চন্দনে মধুতে পুষ্প ঘৃতে
দেহ পোড়ে ডোমের সম্মুখে
বৃহত তালুতে তার ধরা
গতজন্ম ক্রোধ শোক আলো
মরনের পরে সেও বেঁচেছে মরেছে
মরনের আগে তবে যারা বেঁচে ছিল
সব পূর্ব পরিচিত অসুখের দেশে!
৩
নগরী ঘুমিয়ে আছে ত্রাসে
বসন্ত দিনের বেলফুল ফোটে
ব্যক্তিগত পাপে......
ছিঁড়ে যায় অনাহত বেদনার সুর।
স্পর্শ দোষে আজ্ঞাচক্র খোলে
আয়ুরেখা স্পষ্ট দেখা যায়-
তবু মৃত্যু ভয় আবডালে
চেতনা শরীর গ্ৰাস করে।
নরকের পথে যেতে যেতে
কুঁড়িয়ে নিয়েছি দেহ স্থূল
অন্তিম কালের পাপ দোষে
কেন ফুটে ওঠে বেল ফুল!
৪
মৃত নগরীর রাজা আমি
একা জেগে থাকি
শীতের শেষের ঝরা পাতা
জমিয়ে রেখেছি সন্তর্পণে
আগুন পোহাব রাত্রিকাল
সন্ধ্যাহীন রাত্রি নেমে আসে
পাতার মর্মর ধ্বনি পথ
আগুনের দিকে নিয়ে যায়
পথ মাত্র দগ্ধ কারুকাজ
মনে পড়ে অরণ্যের দেশে
স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে চলে গেছি
রাতের আকাশে জ্বলে ওঠে
মৃদু মৃদু জোনাকির আলো
জ্বলে আর নেভে...
পাতার মর্মর প্রতিধ্বনি
হারিয়ে গিয়েছি ভেদ করে
আগুনের দিকে সেও জোনাকির দিকে!
৫
মহানগরীর শোকগাথা
শ্মশানের নীরবতা নিয়ে
জেগে আছে অনিবার্য পথ
জেগে আছে শীতলার থান
পরদেশে পথভ্রষ্ট গাধা...
ওগো বিবি ওলাওঠা দেবী
শান্ত হও আজ ,জল ও বাতাসা
শীতল বাতাস দেব মাগো।
গড়িয়ে গড়িয়ে যে জীবন চলে যায়
তোমার পায়ের কাছে শুইয়ে রাখবো
শান্ত হও দেবী, তীব্র মহামারী জ্বালা
অতিমারী ভয় রোষানলে
মহানগরীর মৃত্যু ভয়
মূত্র মল পাখির ডাকেতে ঘুরে মরে
দমবন্ধ বাতাসের গতি
শান্ত হও ওলাওঠা দেবী
শীতল করো মা নগরীর জনপ্রাণ
অধিকন্তু মিনতি দাসের
পথভ্রষ্ট গাধাটিকে মাগো শোক অর্থে
একা করে দাও-
সেও জেন বোঝে
জন্মের বৃহৎ কোন অন্য অর্থ আছে
পাষাণ করোনা....
প্রাণ দাও দেবী
তৃতীয় নয়ন খুলে যাক।
৬
মানুষেরা ফিরে গেছে ঘরে
সকলে ফিরেছে-
কেউ কেউ এখনো চলেছে
সমূদ্র তরঙ্গে পথচলা পোকার শরীর
ক্লান্তি নেই দুঃখ নেই অপমান হীন
তাদের জীবন ছুটে চলে...
প্রেম ও নৈঃশব্দ্য ভেদ করে
মৃত্যুর দিকের পদধ্বনি
পথের দুধারে পড়ে শবের পাহাড়
শোক ভুলে গিয়ে
মুষল পর্বের শুরু হল।
দেশকাল, রাষ্ট্রহাত মনে রাখে জেন
যাদের নগণ্য ভেবে ছুড়ে ফেলে ছিলে
তাদের গর্ভের শেষে ধংস জেগে আছে
মূষল আঘাতে পাপ ধংস হয়ে যাবে
আধিভৌতিক কোপে পরিত্রাণ পেলেও
মানুষের অভিশাপে অনিবার্য ধংস ধ্বনি বাজে।
ক্ষমতা কে প্রশ্ন করে ওঠে
কত পথ অতিক্রম বাকী রয়ে গেছে!
৭
জন্ম নাও দেবী
মূক করো সকল বাচালে
ধংস কর পৃথিবীর আয়ু
মহামারী পাপ ক্ষয় লোভ
সব পুড়ে জন্ম নিক নতুন নগর
ভষ্ম ভ্রমে জন্ম নিক সন্তান সন্ততি।
বসন্তের দিনগুলি জলমগ্ন গৃহস্থ উঠোন
মাধুকরী দিনগুলো ভালো।
৮
স্পর্শে যদি দোষ হয়ে থাকে
তবে আমি অন্ধ স্পর্শ চাই
অপারগ ছুঁয়ে থাকা দেহ
যে তোমাকে ছুঁলো ক্ষমা সব অপরাধ
কলার ভেলায় ভাসে অতীত জীবন
যে তোমাকে ছুঁয়ে যেতে চায়
তাঁকে তুমি অবসর দিও
তিন ভাগ জল এক ভাগ ডাঙা দিও
হরির লুটের খুঁদকুঁড়ো
যেটুকু রেখেছ জমি বসবাস যোগ্য
ত্রিকাল প্রলয় সংহারে
প্রহর সংকেত নেমে আসে
তাঁকে তুমি ধুপ ও ধুনোয়
নিত্য অনটন গল্প বলো
অধিক ঘনিষ্ঠ অগোচরে
রৌপ্য অলঙ্কার খুলে রেখে
নিরাভরণ দেবী তুমি হ্রীঁ
বসন্ত দিনের গুটিত্বক
দৃশ্যমান ভয়ঙ্কর তারার অসুখে।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
খুব ভালো লাগলো শমীকদা
উত্তরমুছুনভালো লাগলো সময়কে অতিক্রম করতে পারার সাফল্যকে চাক্ষুষ করে। ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন