সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান


অর্ণব চৌধুরীর কবিতা

                  ছবিঃঃ আনন্দী চট্টোপাধ্যায় 



   



ধূর্ত 

সে জানে না,  কীভাবে যে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে
রাষ্ট্রের ভাষায় কথা বলে..
কথা বলে, বলে চলে

এভাবে কাকের বাসা ভেঙে,
কারা যেন রেখে যায়
আধপোড়া স্বপ্নগুলি তার

সে জানে না– কুয়াশার মতো
কেন কেঁপে ওঠে

সন্ন্যাসিনী একা



নিয়তি


সন্ন্যাসের ধুলো ওড়ে
তবু কতো কামনার সূতো
নিজেকে জড়ায়

কতো ভয় ভক্তি নিয়ে মানুষ
রয়েছে এই বিনোদনের বহরে

অসহায় যতোটা যে
ততোটাই উপহাস্য হয়ে ওঠে আজ
কতো পরিহাস নিয়ে বেঁচে থাকে
নধর যাপন

অথচ শহর জুড়ে
পরিযায়ী শ্রমিকের দল
হেঁটে যাচ্ছে দিকশূন্যে

ভাতের গন্ধের মতো
তার রাস্তা চলে গেছে
ত্রিভূবণের পারে

রোদের প্রখর তেজ আর
উদাসীন হাওয়া শুধু যাচ্ছে
পিছুপিছু,

আদিগন্ত খিদের নেশায়


নিশ্চুপ


যদিও এখন জানি চুপচাপ ক্ষয়ে যেতে হয়
অনুমান, হিংসা, ভয়, যেরকম তোমার দস্তুর
আমারও সুখের দিন, সংসারে নশ্বরজন্ম পায়
রক্তের ভিতরে তন্ত্র, ফিরে পায় শৈশবের হাসি

যদিও এখন জানি, ফিরে আর আসবে না কিছু
পাবো না তেমন করে সুখ-দুঃখ, অমৃত ও বিষ
যেমন তোমার ওই দিন গুলি আসন্ন উজ্জ্বল
আমিও তেমন ভাবে বিকশিত তোমার ভিতর

আছি নেই, চুপচাপ, হেসে ওঠা, এই বেঁচে থাকা
মৃত্যু নয় অন্য কিছু ভেসে ওঠে বসন্তের দিনে




মন্তব্যসমূহ

  1. বুকের ভিতর চিনচিন করে উঠলো। মাঝে মাঝে মনে হয় হেরে যাই, কিন্তু বেঁচে তো থাকতেই হবে...

    উত্তরমুছুন
  2. ভালো লাগলো তিনটে কবিতাই। এ সময়ের ধূর্ততা, মানুষের নিয়তি, এক নীরব অসহায় আত্মমন্থন - এ ভাবেই আমাদের বেঁচে থাকতে হয়।

    উত্তরমুছুন
  3. প্রকাশভঙ্গীর উপর নিয়ন্ত্রণ সদর্থকভাবে খেয়াল করলাম। পরে আবার খুঁজে পড়ব, বোধ করি।

    উত্তরমুছুন
  4. তিনটে কবিতাই অসম্ভব ভাল । অনেকদিন পর পড়লাম তোর লেখা ।
    দেখা হবে শীঘ্রই । শুভদীপ ।

    উত্তরমুছুন
  5. তিনটেই খুব ভালো। বিশেষত "নিয়তি" কবিতাটা।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
দীপঙ্কর বাগচীর কবিতা paul gauguin  ঈশ্বর ও গাধার সংলাপ   সকল কাজের কাজ, ফেলে আসে আমাদের গাধা এ জীবন ঘূর্ণমান, এ জীবন বস্তুতঃই বাধা কে তবে ফিরেছে দূরে, সন্ধ্যা সূর্যে এতো রঙ করা বিষাক্ত বীজের ক্ষেত ছুঁয়ে আছে যেভাবে পাহারা এই রাত্রি নমাজের, এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু, আছে নাকি দিনের অদূরে মানুষের মতো ঠোঁট, মানুষের মতো কেউ বসে আমার সমস্তবেলা কেটে যায় কীসের আবেশে ঋতুও যখন আসে ধস্ত হয়ে বিকারের প্রায় দূরে দূরে জ্বলে তারা, বালিকারা কোথায় হারায় দিনের ভিতরে দিন ডুবে গেলে গোলার্ধের পরে কে তবে এসেছ এই রাত্রিদিন এমন আষাঢ়ে এই রাত্রি নমাজের এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু আছে নাকি দিনের অদূরে বাতাস কচুরিপানার দেশে, এসে গেছি অবশেষে ভাঙা বাড়িটার আলো বলেছিলে সব ভালো কোন পথে তোমাকে হারাই  আমার তো কিছু নাই , অন্ধকার বনে তাই একা একা ঘুরে গেছি সব কিছু মিছি মিছি বাতাসের দোলা লেগে ,এসেছে সবাই যতো ভাবি এলোমেলো ,কুয়াশায় কারা এলো ঝোড়ো হাওয়া বুকে নিয়ে এপাড়া ওপাড়া দিয়ে উড়ে যায় টিন ছাদ ,দেখো সাঁই সাঁই তুমি বলেছ...
সৌভিক বসুর কবিতা বাঘ মেঘেদের চুল থেকে খসে পড়া বাজ  ঘুমন্ত মাটির বুকে রেখে যায় দাগ  যেন এক ডোরাকাটা ছোট্ট চিতাবাঘ  আহত মায়ের পাশে তুলেছে আওয়াজ জানলা   কাউকে না জানিয়ে দেখো, একটা রামধনু ভেসে উঠছে  সকাল থেকে একটা মাছি আমাকে ঘিরে গান গাইছে, এইমাত্র  একটা এম্বুলেন্স মৃতদেহ সমেত পাড়া ছেড়ে চলে গেলো... একশো দিনের ওপর হয়ে গেলো, বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে থেকে থেকে     দেখো, কেমন সরীসৃপ হয়ে গেছি এখন চোখ বুজলেই দেখতে পাই-  একটা লোক চীন-ভারত সীমান্তের উপরে দাঁড়িয়ে সৈন্যদের ফুল বিক্রি করছে, আর, তার পায়ের কাছে জড়ো করে রাখা আছে কয়েকশো মিসাইল  বহুদিন হয়ে গেলো আমি কোথাও বেড়াতে যাইনি, সারা পৃথিবী জুড়ে  পশু পাখিদের এখন সামার ভ্যাকেশন চলছে... আজ দুপুরবেলা একজন ফলওয়ালা একটাই মাত্র আম নিয়ে এসেছিল বাড়ির সামনে  ফেসবুকের নীল রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে কয়েকজন  কবি আধ্যাত্মবাদ দিয়ে চিৎকার করে  সারারাত ধরে... আমি চুপচাপ শুয়ে থাকি আর গুনগুন করি  ' Where have all the flower...