সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান


অনুবাদ কবিতা

কবীরের কবিতা

অনুবাদ – চৈতালী চট্টোপাধ্যায় 













চৈতালীর কবীর



মন তো অসাধু ব্যবসায়ী।
তাতে লগ্ন হয়ে আছে এক
কুটিলা পত্নী আর পাঁচ-পাঁচটি
বেয়াড়া সন্তান!
মন,ফিরবে না।

বলছে কবীর, মনে
ভারী শক্ত গিঁট পড়ে গেলে,
সহজে খোলে না




কোরানে কিংবা বেদে,
এ-শিক্ষা কোথাও নেই!
লাগাম লাগিয়ে মুখে,
পিঠে জিন পরাও,
রেকাবে পা দাও।
তারপর চলা-মন,
তারপর পথ,নির্জন,
সোজা স্বর্গে গেছে



লোভ যেন ঢেউয়ের মতো।
তোমাকে ডোবাতে কিছু জল লাগে না!

রাজসিংহাসনে রাজা।
রানী, রূপবতী।

পূজারী পণ্ডিত, কিংবা
ভেল্কি-দেখানো এক যোগী।

নির্জলা সমুদ্রটিতে
সব ডুবে গেলো!

তবে,কে জীবিত?

যার মন শিলায় গ্রস্ত,
কবীর জানালো



তীরে বসে থাকি।
নৌকো আসবে।
কোথায় যাচ্ছি?
স্বর্গ আদৌ আছে নাকি!

ওহে নয়নপথগামি!
তোমাকে সর্বত্র দেখি আমি।

কবীর মিনতি করে,
এ-যাত্রা দাও রেহাই!
আছি বেশ,
এখানেই তো আমার ঠাঁই




(কবীর অনুবাদ করেছি বটে, কিন্তু সেই আধ্যাত্মিকতা বোঝার সাধ্য আমার নেই। সেই সময়ের ভক্তি আন্দোলন,সুফীপ্রভাব এসব জানতে জানতেই তো কেটে যাবে কয়েকটা দশক! কবীর অন্যান্যদের চেয়ে আলাদা কোথায়, সেসব point of departure য়ের জায়গাগুলোও আমার মনে দানা বাঁধেনি এখনও। সরাসরি, 'কবীরের  দোঁহা অনুবাদ  করেছি' না বলে যদি বলি এই লকডাউনের স্বল্প সময়জুড়ে কবীরকে বোঝার চেষ্টা করে গেছি মাত্র, প্রেক্ষাপটে রয়েছে তাঁর লেখাগুলি,অথচ সেই নিরাবলম্ব অবলম্বন,আর্তি, কোনওকিছু সেভাবে এখনও মনের ঘরে জুড়ে বসতে পারেনি...
তবু,এই প্রচেষ্টা। তাই এই 'চৈতালীর কবীর'।আর, এই স্বীকারোক্তি আমার।)



চৈতালী চট্টোপাধ্যায়  


  


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
   " অন্ধকারে হাতে আসে হাত      কে তাকে ধরেছে অকস্মাৎ      কে সে? কথা বলো, কথা বলো।                 শব্দ নেই, শব্দ নেই কোনো                 শব্দ নেই, শব্দ নেই কোনো "                                              ( শক্তি চট্টোপাধ্যায়) ঋণ স্বীকার ও ব্লগজিনের সদস্য বন্ধুরা দীপঙ্কর বাগচী, প্রসূন মজুমদার, আনন্দী চট্টোপাধ্যায়, সৌভিক বসু ও অর্ণব চৌধুরী
বিস্মৃতির পাতা থেকে রবীন আদকের কবিতা সুখ-দুঃখ বুকের গভীরে কিছু দুঃখ থাকে সব মানুষেরই          চোখের পাতার নিচে জল      বুকের ভিতরে এক পবিত্র সমাধি                      গহন শীতল। বহতা হারালে নদী বালির বিস্তারে শুয়ে থাকে            চোখের পাতায় ফল্গুধারা,       বালি সরালেই জল অশ্রুর কিনারা। আমরা সবাই তবু সুখ নামে শুকপাখি পুষি            ছোলা-ছাতু তুলে দিই দাঁড়ে                             এবং ভাঁড়ারে যখন থাকেনা কিছু প্রাচীন দুঃখের কাছে যাই পাখি পিছু ডেকে বলেঃ কোথায় যাচ্ছ হে?                       পাপে,পূন্যে,মোহে নিরুত্তর হেঁটে যাই পুরাতন অস্তিত্বের কাছে মজা নদী জেগে ওঠে, সমাধির নিচে রাখি ফুল        সুখ-দুঃখ কাঁপে যেন চোখের পাতায়   ...