সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান



প্রসূন মজুমদারের কবিতা  











মৃতকথা কথামৃত

মূল্য নেই যেসব কথার সেইসব কথারা তো মৃত

প্রতিটি মূহূর্তে রোজ কথাদের মরে যেতে দেখি

কারা যেন মনে করে শব্দেরা অমোঘ।

স্তব্ধতার শব্দ শুনি কখনও অমোঘই মনে হয়।

তবু যা যা উচ্চারিত সেই মৃদু অথবা সে দৃঢ়

কথার ভিতরে ঘোরে মৃত সব গাছেদের শ্বাস।

ফলত বিশ্বাস থামে,বাঁক নেয়,বাক থেকে মনে

যে কথারা মরে যায় ঝরে যায় অনর্থের জলে

তারা সব চুপিচুপি ফিরে আসে ব্যর্থতায়।স্তব্ধ হতে বলে।




 ফুল ঝরে



আলোর ফুলের গাছ বর্ষার বাগানে।

ছন্দে না, স্বচ্ছন্দে দোলে এতোল- বেতোল।

কাছ থেকে দেখে এই অকুল আষাঢ়ে

অপ্সরাও মনে হতে পারে।

কাছ থেকে দেখে তাকে রেখে দিতে ইচ্ছে হয় ভ্রমের বাগানে, ভিজে ঘ্রাণে।

সমস্তই সম্ভাবনা। অসম্ভবের কাছে যাওয়া।

যে ফুল ফুটেছে তার গর্ভের গরম ভাপে উড়ে আসে হাওয়া।

রেণু ভাসে।

ভেসে চলে, নিয়তির অনিয়ত ফুল, ভাসে ভবিতব্য - জলে

হাওয়ার সুড়ঙ্গ  বেয়ে, ধীরে, আরও ঘূর্ণ্যমান  হাওয়ারই অতলে।




ঘুমপাড়ানিয়া



আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়বো।

কবে?

কেউ জানবে না। বাইরে বৃষ্টি

হবে।

কয়েকটা দাগ তাকিয়ে দেখবে

ছিল।

গাঙে মিশে যাবে নুয়ে চলা গাঙ

চিলও।

জলও ঝরবে না আকাশে কোথাও

চোখে।

আলগোছে আলো ছুঁয়ে যাবে

অন্ধকে।

হরিণী তখনও থমকে যাবে না

দূরে

নতুন হরিণে চুরি করে দেবো

সুরে।




নিজস্বতা



সকলে সুশান্ত সিংহ সকলেই অদ্রীশ বিশ্বাস।

অথবা

সকলে সুশান্ত নয়,সকলেই নয় বিশ্বাস।

কিংবা

কেউই সুশান্ত নয় কেউ নয় আসলে অদ্রীশ

ধরে নাও

কেউ কেউ সুশান্ত সিংহ কেউ কেউ অদ্রীশ স্বয়ং

ফিরে দেখি

আমি কেউ? কেউ নই। নিজে একা গড়ে তুলি ভেঙে দিই

নিজেরই আগুনে পুড়ে চেতনায় জ্বলে উঠি... চিতা। 

মন্তব্যসমূহ

  1. অসামান্য কবিতা। আমি এইসব কবিতার কাছে মাথা নত রাখি।

    উত্তরমুছুন
  2. প্রতিটা কবিতা পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেছি গেছি । একটা অন্য ফর্মের কবিতা পেলাম । খুব ভালো লেগেছে । আপনার দীর্ঘ সুস্থ জীবন কামনা করি ।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
অনির্বেদ পান্ডার কবিতা  পতঙ্গ জীবনের আবছায়া থেকে কয় মুহুর্ত ১. গোপন বৃষ্টি আঁচলে লুকিয়ে, চলেছ তুমি অন্য শহরে আজ লম্বা কোট সাথে নিও তুষার ঝরে ও পথে; ছিঁড়ে দিলাম কয়েকটি পাতা সঙ্গে নিও, সঙ্গে থাক যদি প্রয়োজন একান্ত দ্বৈরথে। আগামীর শহরগুলিতে কিভাবে নিঃশ্বাস নেয় কিভাবে সবাই বলে 'ভালোবাসি' কাদের রক্তে কোথায় পালন মানুষের উৎসব হাস্যকর জ্যোৎস্নার নীচে কিছুই জানো না তুমি তবুও যাত্রা হোক তবুও যাত্রা আজ গোপন বৃষ্টি আঁচলে লুকিয়ে পা রাখো সে পথে যে পথ এখনও শোনেনি বৃষ্টির আওয়াজ... ২. অদ্ভূত সূর্য এক ভেসে ওঠে রাতের আকাশে এতটুকু পথ আর ক্লান্ত তারার চাদর জড়িয়ে নিমেষেই পার হতে পার তুমি নিমেষেই ছুঁয়ে ফেলতে পার ইতস্তত উড়তে থাকা ঝলমলে অক্ষরঝাঁক তবু, বিগত অনেক রাতের মতোই নিয়মমাফিক, হাওয়া বয়ে আসে ধীরে চৌকাঠের এপাশে শান্ত, বসে থাকো তুমি শূন্য শাদা কাগজের কাছে, অনন্ত, ব্যর্থ প্রতীক্ষায় - পতঙ্গের দীর্ঘ ছায়া কেঁপে কেঁপে ওঠে ঘরে ৩. অতীতের কাহিনীরা দল বেঁধে এলো আক্রমণে তুমি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়লে খামখাই ফিরবে না আর, এই ঠিক করে - একে একে হেঁটে...
পূর্বা মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা    ইতিবৃত্ত, ইতিবৃত্ত নয়...                  আঁচ ------- মরা অক্ষরের গায়ে যতটুকু প্রাণ, ততটুকু প্রেম। আমি আর ততোধিক নই। বাতাস ফুরিয়ে গেলে সর্বস্ব সমেত উবে যাব। ফেলে যাব দুটিমাত্র বই - 'ইতিবৃত্ত'।' ইতিবৃত্ত নয়'। ওরা কোনও পাঠক পাবে না। কড়াই --------- নেভা আগুনের আঁচ গসগসে হয়। উনুনের দূরছাই জ্বর। বাবা কি ওষুধ দেবে?রাত্তিরে উনোন ঘুমোবে? নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবে কয়েকটা বছর? উনুন না জ্বেলে আমি কোনওদিন লিখতে  পারিনি। পালতেই পারিনি এই সামান্য জীবন ! 'এইসব সাময়িক উত্তেজনা ' উনি বলতেন। উনি, মানে শিয়রে শমন, আমি যাতে লেখাপত্র সুসিদ্ধ করতাম। অলীক ----------- রাত্রি একটার পর ঘড়ির কাঁটারা তীব্র হয় শ্বাসাঘাত গুণে গুণে লিখি জল দাও জল দাও জল দাও আমার শেকড়ে... জানলায় পর্দা ওড়ে, দেয়ালে তেষ্টার ছায়া পড়ে ঝুরিনামা শায়িত গাছের। দুহিতা --------- ধূপছায়া মেয়ে আহা ধূপছায়া মায়ের সন্তান পিছু পিছু দু পা হাঁটে, দু আঙুলে আঁচল জড়ায়। 'ও কি রে মা !  ভয় পাস ? আয় দেখি, কাছে ...