সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আম্রপালি দে'র কবিতা 









জলের মতন 



পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় দীর্ঘ হতে চলেছি
কখনো প্রেমিকের আঙ্গুল মুঠিতে নিয়ে ঘুরি 
কখনো বা পা ফাঁক করে শুয়ে পড়ি খবরের কাগজে

ফোস্কার ভেতরে আজন্ম জল থৈথৈ করে,
জল তো সামাজিক সঙ্গম
আমি কি রটিয়ে দিতে পারি না জলের খবর?



আত্মমগ্নতা কাটিয়ে আরো একা হতে চাইছি
চাইছি দেবীর মুখের দিকে সরাসরি তাকাতে

দেবীর চোখ অপাপবিদ্ধতার আতঙ্কে 
টনটন করে ওঠে 
অদ্ভুত ভয়ে একরাতে তিনি পাথর হয়ে ওঠেন...



অকৃতদারের মতো আশ্বিনের সাদা কাশ দেখি আমি,
দেখি, একটি দুর্দান্ত লাশ রোজ পাশে হেঁটে যায় 
আমি পাশ ফিরে অগ্রাহ্য করি , 
ঘুমের ভেতরে ঢুকে যাই নরকে,

অথচ বুঝিনি এ আমারই আর্তনাদ,
বাতানুকুল ঘরের স্যাঁতস্যাতে আত্মপ্রদীপ...

মন্তব্যসমূহ


  1. "আমি কি রটিয়ে দিতে পারি না জলের খবর?"
    একটা সহজ কথা, অথচ কী প্রবল দ‍্যোতনা তার। কবিতাটিকে এক অন‍্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে! সত্যিই তো, জলের আরেক নাম জীবন। ওখান থেকেই তো প্রাণের উৎপত্তি। যাকে তুমি একটা ফোস্কার মধ‍্যে ধরে রেখেছো।

    "দেবীর চোখ অপাপবিদ্ধতার আতঙ্কে
    টনটন করে ওঠে"

    "অকৃতদারের মতো আশ্বিনের সাদা কাশ" দারুন উপমা।

    "একটি দুর্দান্ত লাশ রোজ পাশে হেঁটে যায়
    আমি পাশ ফিরে অগ্রাহ্য করি , "
    পাঠককে নিশ্চয়ই প্রভাবিত করবে এসব কবিতা। খুব ভালো লাগলো হে, কবিতা গুলো।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. অনেক ধন্যবাদ সুকৃতি দাদা, আপনি পড়লে আমার খুব ভালো লাগে । শুভেচ্ছা সতত

      মুছুন
  2. দুই নম্বর কবিতাটা ভালো লাগল।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
দীপঙ্কর বাগচীর কবিতা paul gauguin  ঈশ্বর ও গাধার সংলাপ   সকল কাজের কাজ, ফেলে আসে আমাদের গাধা এ জীবন ঘূর্ণমান, এ জীবন বস্তুতঃই বাধা কে তবে ফিরেছে দূরে, সন্ধ্যা সূর্যে এতো রঙ করা বিষাক্ত বীজের ক্ষেত ছুঁয়ে আছে যেভাবে পাহারা এই রাত্রি নমাজের, এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু, আছে নাকি দিনের অদূরে মানুষের মতো ঠোঁট, মানুষের মতো কেউ বসে আমার সমস্তবেলা কেটে যায় কীসের আবেশে ঋতুও যখন আসে ধস্ত হয়ে বিকারের প্রায় দূরে দূরে জ্বলে তারা, বালিকারা কোথায় হারায় দিনের ভিতরে দিন ডুবে গেলে গোলার্ধের পরে কে তবে এসেছ এই রাত্রিদিন এমন আষাঢ়ে এই রাত্রি নমাজের এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু আছে নাকি দিনের অদূরে বাতাস কচুরিপানার দেশে, এসে গেছি অবশেষে ভাঙা বাড়িটার আলো বলেছিলে সব ভালো কোন পথে তোমাকে হারাই  আমার তো কিছু নাই , অন্ধকার বনে তাই একা একা ঘুরে গেছি সব কিছু মিছি মিছি বাতাসের দোলা লেগে ,এসেছে সবাই যতো ভাবি এলোমেলো ,কুয়াশায় কারা এলো ঝোড়ো হাওয়া বুকে নিয়ে এপাড়া ওপাড়া দিয়ে উড়ে যায় টিন ছাদ ,দেখো সাঁই সাঁই তুমি বলেছ...
পূর্বা মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা    ইতিবৃত্ত, ইতিবৃত্ত নয়...                  আঁচ ------- মরা অক্ষরের গায়ে যতটুকু প্রাণ, ততটুকু প্রেম। আমি আর ততোধিক নই। বাতাস ফুরিয়ে গেলে সর্বস্ব সমেত উবে যাব। ফেলে যাব দুটিমাত্র বই - 'ইতিবৃত্ত'।' ইতিবৃত্ত নয়'। ওরা কোনও পাঠক পাবে না। কড়াই --------- নেভা আগুনের আঁচ গসগসে হয়। উনুনের দূরছাই জ্বর। বাবা কি ওষুধ দেবে?রাত্তিরে উনোন ঘুমোবে? নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবে কয়েকটা বছর? উনুন না জ্বেলে আমি কোনওদিন লিখতে  পারিনি। পালতেই পারিনি এই সামান্য জীবন ! 'এইসব সাময়িক উত্তেজনা ' উনি বলতেন। উনি, মানে শিয়রে শমন, আমি যাতে লেখাপত্র সুসিদ্ধ করতাম। অলীক ----------- রাত্রি একটার পর ঘড়ির কাঁটারা তীব্র হয় শ্বাসাঘাত গুণে গুণে লিখি জল দাও জল দাও জল দাও আমার শেকড়ে... জানলায় পর্দা ওড়ে, দেয়ালে তেষ্টার ছায়া পড়ে ঝুরিনামা শায়িত গাছের। দুহিতা --------- ধূপছায়া মেয়ে আহা ধূপছায়া মায়ের সন্তান পিছু পিছু দু পা হাঁটে, দু আঙুলে আঁচল জড়ায়। 'ও কি রে মা !  ভয় পাস ? আয় দেখি, কাছে ...