শুভ্রা মুখার্জীর কবিতা
ছবিঃ নির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
মায়া সভ্যতার লিপি
১
এভাবে দুপায়ে জল ছিটিয়ে ফিরে আসার কথা ক'জন মনে রাখে বলো
পদ্যগুলি কথকতা কেন্দ্রিক
স্থানীয় সংবাদে লেগে থাকে হাঁসের পায়ের ছাপ
অতি অল্প হলেও সমস্ত জলজ স্বপ্নের গায়ে
জড়িয়ে থাকে বেয়াড়া আঁশটে গন্ধ
সময় ভালো নয়
এইটুকু বলে তুমি স্বপ্নের শরীর থেকে সোনারঙ আঁশ বেছে নিতে নিচু হলে
বালিঘড়ি শুভেচ্ছা বাজায়
মায়া আকাশের থেকে ভেসে আসে সন্তদের গান
২
কেন যে লিখিত গল্পের মতো হয়ে যেতে চাও
কি বলে যেতে চাই আমি
সুরম্য ঘূর্ণির গায়ে ছোট ছোট কাঁচফুল
লেগে থাকে
অনর্থক খুলে পড়ে যায়
রঙদার অতীত থেকে ক্রমান্বয়ে উঠে আসে
বুড়ো সিংহের মাথা
যক্ষ্মীর খুবলানো স্তন
পাঁচিলের অযথা বিষাদ
পকেটে বিষাদ ছাড়া আর কিছু নেই বলে
একা শ্যাওলার সাথে চাঁদের কথন দৃশ্য অতিদ্রুত সংকুচিত হয়ে আসে
অলস দোকানের ঝাঁপে মিহি সুতোর সন্ধে নামে
নিকানো শূণ্যতার মতো লাল রুমালের নিচে গল্পের কাহিনী অংশ
৩
যে রাস্তায় অল্প হেঁটে বাকিটুকু দৌড়ে এসেছ
সেখানেই গাছের গভীর থেকে প্রতিরক্ষা ঝরে
মায়াবী ফলের দেহ থেকে খসখসে মরা চামড়া উঠে যায়
হাওয়াতে এককালীন বৈশালী নগর
প্রবন্ধে পরপর তুলনা সাজানো
এখন নৌকো এলে শিকড় সমেত তাতে উপড়ে বসাবো
সবুজ ধানের দেহ
সাদাটে মৌরির ফুল
রাত আরও ঘন হয়
ক্ষয়াটে চাঁদের লোভ আমাদের উন্মত্ত করে
সমস্ত সম্বন্ধ থেকে দূরে গিয়ে বুঝি
আমি এক ক্ষুধাতুর বক
শুধু মাছ পেলে
অনায়াস কেটে যাবে এই ঋতুকাল
৪
কি বলে যেতে চাই আমি
অথচ বলতে পারিনা
আমাদের ক্ষোভ-রক্ত-ঘাম
এবং সুরেলা সরোদ
শুধুই কি এইসব, বলে যেতে চাই অথচ
বলতে পারিনা।
জীবন আমাদের শূন্যে ছুঁড়ে
বাঁকাচোরা ভঙ্গিমায় নিচে নামিয়ে
অনির্বাণ মজা দেখে
মাটিতে গড়িয়ে পড়ে
তার থেকে হাসি ও উদ্দীপনা
কান লাল করা জলের প্রভূত রঙ ঝরে যায়
দু পেয়ে যুবতী তুমি
তোমাকে অদেয় আর কিছুই তো নেই আমাদের
নুন বলো অথবা গোলাপি মদ
কালো মন্দিরের গা থেকে খুলে আনা আগ্রহী নিক্কণ
এসবই বলার ভাঁজে লুকানো ভুল বলে জানি
ভ্রান্তি জেনে দু'হাতে মোড়ক পাকাই
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন