সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শুভ্রা মুখার্জীর কবিতা













ছবিঃ নির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় 









মায়া সভ্যতার লিপি




এভাবে দুপায়ে জল ছিটিয়ে ফিরে আসার কথা ক'জন মনে রাখে বলো

পদ্যগুলি কথকতা কেন্দ্রিক 
স্থানীয় সংবাদে লেগে থাকে হাঁসের পায়ের ছাপ 

অতি অল্প হলেও সমস্ত জলজ স্বপ্নের গায়ে
জড়িয়ে থাকে বেয়াড়া আঁশটে গন্ধ  

সময় ভালো নয় 
এইটুকু বলে তুমি স্বপ্নের শরীর থেকে সোনারঙ আঁশ বেছে নিতে নিচু হলে 

বালিঘড়ি শুভেচ্ছা বাজায়
মায়া আকাশের থেকে ভেসে আসে সন্তদের গান 



কেন যে লিখিত গল্পের মতো হয়ে যেতে চাও


সুরম্য ঘূর্ণির গায়ে ছোট ছোট কাঁচফুল
লেগে থাকে
 অনর্থক খুলে পড়ে যায় 

রঙদার অতীত থেকে ক্রমান্বয়ে উঠে আসে
বুড়ো সিংহের মাথা 
যক্ষ্মীর খুবলানো স্তন
পাঁচিলের অযথা বিষাদ

পকেটে বিষাদ ছাড়া আর কিছু নেই বলে
একা শ্যাওলার সাথে চাঁদের কথন দৃশ্য অতিদ্রুত সংকুচিত হয়ে আসে  


অলস দোকানের ঝাঁপে মিহি সুতোর সন্ধে নামে
নিকানো শূণ্যতার মতো লাল রুমালের নিচে গল্পের কাহিনী অংশ

যে রাস্তায় অল্প হেঁটে বাকিটুকু দৌড়ে এসেছ
সেখানেই গাছের গভীর থেকে প্রতিরক্ষা ঝরে
মায়াবী ফলের দেহ থেকে খসখসে মরা চামড়া উঠে যায়

হাওয়াতে এককালীন বৈশালী নগর
প্রবন্ধে পরপর তুলনা সাজানো 
এখন নৌকো এলে শিকড় সমেত তাতে উপড়ে বসাবো
সবুজ ধানের দেহ 
সাদাটে মৌরির ফুল 

রাত আরও ঘন হয়
ক্ষয়াটে চাঁদের লোভ আমাদের উন্মত্ত করে  

সমস্ত সম্বন্ধ থেকে দূরে গিয়ে বুঝি
আমি এক ক্ষুধাতুর বক
শুধু মাছ পেলে 
 অনায়াস কেটে যাবে এই ঋতুকাল


কি  বলে যেতে চাই আমি
অথচ বলতে পারিনা
আমাদের ক্ষোভ-রক্ত-ঘাম
এবং সুরেলা সরোদ
শুধুই কি এইসব, বলে যেতে চাই অথচ
বলতে পারিনা।

জীবন আমাদের শূন্যে ছুঁড়ে
বাঁকাচোরা ভঙ্গিমায় নিচে নামিয়ে
অনির্বাণ মজা দেখে
মাটিতে গড়িয়ে পড়ে
তার থেকে হাসি ও উদ্দীপনা
কান লাল করা জলের প্রভূত রঙ ঝরে যায়

দু পেয়ে যুবতী তুমি
তোমাকে অদেয় আর কিছুই তো নেই আমাদের
নুন বলো অথবা গোলাপি মদ
কালো মন্দিরের গা থেকে খুলে আনা আগ্রহী নিক্কণ

এসবই বলার ভাঁজে লুকানো ভুল বলে জানি
ভ্রান্তি জেনে দু'হাতে মোড়ক পাকাই   

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
অনির্বেদ পান্ডার কবিতা  পতঙ্গ জীবনের আবছায়া থেকে কয় মুহুর্ত ১. গোপন বৃষ্টি আঁচলে লুকিয়ে, চলেছ তুমি অন্য শহরে আজ লম্বা কোট সাথে নিও তুষার ঝরে ও পথে; ছিঁড়ে দিলাম কয়েকটি পাতা সঙ্গে নিও, সঙ্গে থাক যদি প্রয়োজন একান্ত দ্বৈরথে। আগামীর শহরগুলিতে কিভাবে নিঃশ্বাস নেয় কিভাবে সবাই বলে 'ভালোবাসি' কাদের রক্তে কোথায় পালন মানুষের উৎসব হাস্যকর জ্যোৎস্নার নীচে কিছুই জানো না তুমি তবুও যাত্রা হোক তবুও যাত্রা আজ গোপন বৃষ্টি আঁচলে লুকিয়ে পা রাখো সে পথে যে পথ এখনও শোনেনি বৃষ্টির আওয়াজ... ২. অদ্ভূত সূর্য এক ভেসে ওঠে রাতের আকাশে এতটুকু পথ আর ক্লান্ত তারার চাদর জড়িয়ে নিমেষেই পার হতে পার তুমি নিমেষেই ছুঁয়ে ফেলতে পার ইতস্তত উড়তে থাকা ঝলমলে অক্ষরঝাঁক তবু, বিগত অনেক রাতের মতোই নিয়মমাফিক, হাওয়া বয়ে আসে ধীরে চৌকাঠের এপাশে শান্ত, বসে থাকো তুমি শূন্য শাদা কাগজের কাছে, অনন্ত, ব্যর্থ প্রতীক্ষায় - পতঙ্গের দীর্ঘ ছায়া কেঁপে কেঁপে ওঠে ঘরে ৩. অতীতের কাহিনীরা দল বেঁধে এলো আক্রমণে তুমি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়লে খামখাই ফিরবে না আর, এই ঠিক করে - একে একে হেঁটে...
পূর্বা মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা    ইতিবৃত্ত, ইতিবৃত্ত নয়...                  আঁচ ------- মরা অক্ষরের গায়ে যতটুকু প্রাণ, ততটুকু প্রেম। আমি আর ততোধিক নই। বাতাস ফুরিয়ে গেলে সর্বস্ব সমেত উবে যাব। ফেলে যাব দুটিমাত্র বই - 'ইতিবৃত্ত'।' ইতিবৃত্ত নয়'। ওরা কোনও পাঠক পাবে না। কড়াই --------- নেভা আগুনের আঁচ গসগসে হয়। উনুনের দূরছাই জ্বর। বাবা কি ওষুধ দেবে?রাত্তিরে উনোন ঘুমোবে? নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবে কয়েকটা বছর? উনুন না জ্বেলে আমি কোনওদিন লিখতে  পারিনি। পালতেই পারিনি এই সামান্য জীবন ! 'এইসব সাময়িক উত্তেজনা ' উনি বলতেন। উনি, মানে শিয়রে শমন, আমি যাতে লেখাপত্র সুসিদ্ধ করতাম। অলীক ----------- রাত্রি একটার পর ঘড়ির কাঁটারা তীব্র হয় শ্বাসাঘাত গুণে গুণে লিখি জল দাও জল দাও জল দাও আমার শেকড়ে... জানলায় পর্দা ওড়ে, দেয়ালে তেষ্টার ছায়া পড়ে ঝুরিনামা শায়িত গাছের। দুহিতা --------- ধূপছায়া মেয়ে আহা ধূপছায়া মায়ের সন্তান পিছু পিছু দু পা হাঁটে, দু আঙুলে আঁচল জড়ায়। 'ও কি রে মা !  ভয় পাস ? আয় দেখি, কাছে ...