সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান








জয়দীপ রাউতের কবিতা















চিত্র শিল্পী– কথা নন্দী 













পুরাণ 

যে অমোঘ যন্ত্রণার সঙ্গে আজ পরিচয় হ'ল
কে জানে হয়তো বা সে, শাপভ্রষ্ট কোনো অপ্সরা–
নৃত্য অধ্যায়নকালে ভুল করে ঢুকে পড়েছিল কোনো
মুনি, মহামুনিটির ধ্যানে...

সেই থেকে এই অন্য পৃথিবীর হাওয়ায় হাওয়ায় 
সে কেঁদে বেড়ায়, সে নেচে বেড়ায়
অতিকায় প্যাডিস্টাল ফ্যানে 



আতুর

ঘটনা, দুর্ঘটনায় যে আলো পড়েছে
সে কোন বিগত নক্ষত্র'র! 
বাইরে দাঁড়াই এসে, দেখি ভোর,
দেখি ঝ'রে গেছে বাগানের ফুলগুলো।

আকাশে উড়ছে শুধু সাদা বকপাখি
                    মেয়ের চুমুর মতো তুলো 




প্রণাম 

মহামায়ে জগৎ মাতে
কালিকে ঘোর দক্ষিণে
গৃহাং বন্দনং দেবী
নমহস্তে পরমেশ্বরী 

নমহস্তে পরমেশ্বরী

নমহস্তে পরমেশ্বরী
এই মন্ত্র মনে মনে উচ্চারণ করি
উচ্চারণ করি
উচ্চারণ করি আর কিভাবে কি জানি
পঞ্চমুখী  ডানহাতখানি
কী এক অব্যক্ত তীব্র যন্ত্রণায়

সহসা রুপান্তর ঘটে রক্তজবায়



নার্স

শুধু আজ 
বাগান পরিচর্যার কাজ

আর কিছু নয়
শুধু আজ

অধীর আঘাতে তুমি
তুলো আর গজ আর হাতের সুকারুকাজ 
এই দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছ এক 

মৃদু গন্ধরাজ 

 
         























চিত্র শিল্পী– কথা নন্দী 






আদিষ্ট 

লেখো, কেঁপে ওঠা হাত।

রক্তে যখন উপচে 
উঠেছে দোয়াত।




কথা 

কে হাত ধরবে আর
কে দেবে আশ্রয়?
যখন লাভার মতো গলিত মাংসস্রোতে
ডুবেছে আঙুল

খসে যাওয়া নখও আর নখের যোগ্য নয়






যোগ

মা, আমি বাগান করেছি। 
নিজ হাতে কুপিয়েছি নাড়ি আর 
যেই বীজ রোপণ করেছি
তাতে রক্ত ঢেলেছি প্রত্যহ দুই চার মগ
মা আমার ফুলে ওঠা রগ 
কঠিন ডালের মতো বিস্তারিত হোক

একদিন যেন তাতে
রঘু ডাকাতের মতো লাল
জবা ফুল ফুটে ওঠে


মন্তব্যসমূহ

  1. কথার নন্দীর সঙ্গে জয়দীপবাবুর বিবাহ-বহির্ভূত দাম্পত্যের যন্ত্রণা কবিতাগুলির মর্মে মর্মে ফুটে উঠেছে। জয়দীপবাবুর কবিতা যত পড়ি মুগ্ধ হয়ে যাই। ওঁদের এই অপরূপ সম্পর্কটাও আমাদের মতো পাঠকের বিস্ময়ে প্রাণ ভরিয়ে দেয়। আপনাদের ভালবাসা, দাম্পত্য অমর হোক। প্রণাম নেবেন কবি।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দীপঙ্কর বাগচীর কবিতা paul gauguin  ঈশ্বর ও গাধার সংলাপ   সকল কাজের কাজ, ফেলে আসে আমাদের গাধা এ জীবন ঘূর্ণমান, এ জীবন বস্তুতঃই বাধা কে তবে ফিরেছে দূরে, সন্ধ্যা সূর্যে এতো রঙ করা বিষাক্ত বীজের ক্ষেত ছুঁয়ে আছে যেভাবে পাহারা এই রাত্রি নমাজের, এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু, আছে নাকি দিনের অদূরে মানুষের মতো ঠোঁট, মানুষের মতো কেউ বসে আমার সমস্তবেলা কেটে যায় কীসের আবেশে ঋতুও যখন আসে ধস্ত হয়ে বিকারের প্রায় দূরে দূরে জ্বলে তারা, বালিকারা কোথায় হারায় দিনের ভিতরে দিন ডুবে গেলে গোলার্ধের পরে কে তবে এসেছ এই রাত্রিদিন এমন আষাঢ়ে এই রাত্রি নমাজের এই রাত্রি প্রার্থনার ঘোরে উপাসনা ছাড়া কিছু আছে নাকি দিনের অদূরে বাতাস কচুরিপানার দেশে, এসে গেছি অবশেষে ভাঙা বাড়িটার আলো বলেছিলে সব ভালো কোন পথে তোমাকে হারাই  আমার তো কিছু নাই , অন্ধকার বনে তাই একা একা ঘুরে গেছি সব কিছু মিছি মিছি বাতাসের দোলা লেগে ,এসেছে সবাই যতো ভাবি এলোমেলো ,কুয়াশায় কারা এলো ঝোড়ো হাওয়া বুকে নিয়ে এপাড়া ওপাড়া দিয়ে উড়ে যায় টিন ছাদ ,দেখো সাঁই সাঁই তুমি বলেছ...
অরিত্র সান্যালের গুচ্ছ কবিতা  কয়েকটি লেখা                                 [ যা আমি গিলে খেয়েছি এতকাল প্রতিটি নিরুদ্দেশের অন্ধকার আমার মধ্যে আজ অনর্গল উসখুস করে কালো কালি ] ১। গর্ত থেকে পতন উপচে পড়ছে আমার বিশাল সব জাহাজ একে একে শূন্যতা গেঁজিয়ে ভেসে ওঠে মণি ঘিরে এক বন্ধ মাল্লা আমার আমার চারিদিক সম্পূর্ণ নয় এখনও ২। চার পাঁচটা অসম্পূর্ণ বাক্যের মধ্যে আছি এখন সে সব থেকে সুতো বেরিয়ে আছে হাওয়া নাড়ায় তাদের একটা পর্দা যেভাবে আমাদের ঘিরে রাখে বাইরে অনাদি শীতল কাল ৩। একটি প্রশ্নচিহ্নের আঁকশি নেমে আসে কে কে ফিরে যেতে চাও ফেলে আসা মাধ্যাকর্ষণে? খাদ থেকে এখন আমার স্বর হাউই ছুঁড়ল একটি- তারপর? জীবন অনন্ত শূন্যতায় উদ্ধৃত ৪। আমার পিছনে এখন তুমি এসে বসেছ-  শান্ত নিস্পন্দ ঝরে যাওয়া এখন শুধুই যতটুকু বয়ে নিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস আমি তোমার না-লেখার ...
অনুবাদ কবিতা কবীরের কবিতা অনুবাদ – চৈতালী চট্টোপাধ্যায়  চৈতালীর কবীর ১ মন তো অসাধু ব্যবসায়ী। তাতে লগ্ন হয়ে আছে এক কুটিলা পত্নী আর পাঁচ-পাঁচটি বেয়াড়া সন্তান! মন,ফিরবে না। বলছে কবীর, মনে ভারী শক্ত গিঁট পড়ে গেলে, সহজে খোলে না ২ কোরানে কিংবা বেদে, এ-শিক্ষা কোথাও নেই! লাগাম লাগিয়ে মুখে, পিঠে জিন পরাও, রেকাবে পা দাও। তারপর চলা-মন, তারপর পথ,নির্জন, সোজা স্বর্গে গেছে ৩ লোভ যেন ঢেউয়ের মতো। তোমাকে ডোবাতে কিছু জল লাগে না! রাজসিংহাসনে রাজা। রানী, রূপবতী। পূজারী পণ্ডিত, কিংবা ভেল্কি-দেখানো এক যোগী। নির্জলা সমুদ্রটিতে সব ডুবে গেলো! তবে,কে জীবিত? যার মন শিলায় গ্রস্ত, কবীর জানালো ৪ তীরে বসে থাকি। নৌকো আসবে। কোথায় যাচ্ছি? স্বর্গ আদৌ আছে নাকি! ওহে নয়নপথগামি! তোমাকে সর্বত্র দেখি আমি। কবীর মিনতি করে, এ-যাত্রা দাও রেহাই! আছি বেশ, এখানেই তো আমার ঠাঁই ( কবীর অনুবাদ করেছি বটে, কিন্তু সেই আধ্যাত্মিকতা বোঝার সাধ্য আমার নেই। সেই সময়ের ভক্তি ...